চলমান লকডাউনের’ সুযোগে আওয়ামী লীগ সরকার সারাদেশে ক্র্যাকডাউনে নেমেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, লকডাউনকে কেন্দ্র করে তারা একটা ক্র্যাকডাউনে নেমেছে। এই ক্র্যাকডাউনে নেমে তারা এখন সমস্ত বিরোধী দলের নেতাকর্মী এবং আমাদের অঙ্গ-সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২৬ মার্চের স্বাধীনতা দিবস ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হামলা এবং পুলিশের গুলিতে ২০ জনের মতো সাধারণ মানুষ মারা গেছে। আওয়ামী লীগ ইতোপূর্বে নিজেরা ঘটনা তৈরি করে বিরোধী দল, বিশেষ করে বিএনপির ওপরে চড়াও হয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হাজার-হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। এবারও ২৬ মার্চের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য মিথ্যা মামলা দিয়ে আবারও আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করতে শুরু করেছে।’

এখন পর্যন্ত ১৮১ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এরমধ্যে পাবনায় গ্রেফতার অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে একজনের। গ্রেফতার হওয়াদের মধ্যে ছাত্রদলের বিভিন্ন ইউনিটিরে ৮১ জন, স্বেচ্ছাসেবক দলের ১১, যুবদলের ৩০ জনেরও বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য নেতাকর্মীদের বাসায় প্রতিনিদিই পুলিশ গিয়ে হয়রানি করছে। যার কারণে নেতাকর্মীরা বাসায় থাকতে পারছে না।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘এই যে অবস্থা তৈরি হয়েছে, এটাকে হালকা করে নেওয়ার কিছু নেই। আমরা বরারবরই যেটা দেখিছি, আওয়ামী লীগের ওপর যেহেতু জনগণের কোনো সমর্থন ও জনভিত্তি নেই। তাই তারা এভাবে অত্যাচার, নির্যাতন, হত্যার মধ্যে দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হবে। সেই কারণে এই পবিত্র রমজান মাসেও তারা এ ধরনের হীন কাজে লিপ্ত হয়েছে। বিরোধী দলের সংবিধান সম্মত অধিকার হরণ করে তারা অতীতে যে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখেছিল তা বাস্তবায়ন করতে খুন, গুম ও গ্রেফতারের ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে।’

হেফাজতে ইসলাম বা তাদের কোনো কর্মসূচির সঙ্গে বিএনপি এবং এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কোনো সম্পর্ক না থাকলেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হেফাজত সংশ্লিষ্ট মামলাতেও বিএনপির নেতাকর্মীদের নাম জড়িয়ে গ্রেফতার ও হয়রানি করা হচ্ছে বলে দাবি করে মির্জা ফখরুল।

বাংলাদেশে এখন কোনো গণতন্ত্র নেই দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। তারা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এ কারণে বাম, ডান, ইসলামী দল, বিএনপিসহ সব দলের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। সবার মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছে।’

গ্রেফতার হওয়া নিপুণ রায় চৌধুরী, শাহাদাত হোসেন এবং রফিকুল আলম মজনুসহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ’তাদের নামে দেওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় এর খেসারত এ সরকারকে দিতে হবে। একদিন জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।’

করোনার এ মহাদুর্যোগের মধ্যেও বাগাড়ম্বর বক্তব্য দেওয়া ছাড়া সরকার জনকল্যাণে কোনো কাজ না করে বিএনপিসহবিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর বেপরোয়া গতিতে জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ’করোনা মোকাবিলায় সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে আওয়ামী সরকার আরও বেশি আগ্রাসী নাৎসীবাদী পথ অবলম্বন করে বিরোধী দলকে নিঃশেষ করার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।’

এএইচআর/এসএম