খালেদা জিয়া /ছবি- সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি না দেওয়াকে সরকারের অমানবিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন দলটির নেতারা। তারা বলছেন, সরকার অনেক দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে ক্ষমা করে দিয়েছে। সেখানে খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সরকারের হুকুমে একটি ফরমায়েশি রায়ে সাজা দেওয়া হয়েছে। সরকার চাইলে তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে পারত।

রোববার (৯ মে) বিকেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাজাপ্রাপ্ত আসামির বিদেশ যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত অনুযায়ী তাদের (খালেদা জিয়ার ভাইয়ের) আবেদন মঞ্জুর করতে পারছি না। আইন অনুযায়ী যতটুকু করণীয় ততটুকু করেছি। কিন্তু আইনের বাইরে গিয়ে আমরা কিছু করতে পারি না। এর আগে গত ৫ মে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করে ভাই শামীম ইস্কান্দার।  

চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার বিদেশে যেতে অনুমতি দিতে আইনগত কোনো সমস্যা নেই বলে মনে করছেন তার আইনজীবী ও দলের যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চাইলে শর্ত কমিয়ে বা বাড়িয়ে তাকে বিদেশে চিকিৎসা করার সুযোগ দিতে পারত। এখন তারা যে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে তা অমানবিক।

এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া /ছবি- সংগৃহীত

বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকার প্রতিহিংসাবশত মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে ম্যাডামকে কারাগারে নিয়েছিল। সেখানে তাকে চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে আজকের এই অবস্থায় নিয়ে এসেছে। এখনও সরকার চায় না বেগম জিয়ার সুচিকিৎসা হোক। তাই তাকে বিদেশে যেতে অনুমতি দেয়নি।

তিনি আরও বলেন, সরকার কত দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে মুক্তি দিচ্ছে। আর বেগম জিয়াকে একটা মিথ্যা মামলা সরকারের ইচ্ছায় সাজা দেওয়া হয়েছে। এখন তারা চাইলে ম্যাডামকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দিতে পারত। এখানে আইনের কিছু নেই। তাছাড়া ম্যাডাম আইনগতভাবে মুক্তি পায়নি। তাকে সরকার প্রধান নির্বাহী আদেশে মুক্তি দিয়েছে। এখন তিনি চাইলে তাকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দিতে পারতেন।  

প্রধানমন্ত্রী কথায়-কথায় মানবতার কথা বলেন বলে উল্লেখ করে প্রিন্স বলেন, আমরা মানবিক কারণে ম্যাডামকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য অনুমতি দেওয়ার আহ্বান করে ছিলাম। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর কথায় মনে হয়েছিল তারা বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাকে বিদেশে যেতে অনুমতি দেবে। কিন্তু তারা সেটা করেনি। আমরা বলতে চাই, এখন খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারকে এককভাবে দায় নিতে হবে।

খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার অনুমতি না দেওয়ার প্রসঙ্গে সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে বক্তব্য দেবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরমান সালেহ প্রিন্স জানান, এ বিষয়ে মহাসচিব সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে দলের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেবেন। 

এএইচআর/ওএফ