জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘রাজনৈতিক সংকট : উত্তরণ কোন পথে’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা/ ছবি- ঢাকা পোস্ট

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে রাজনৈতিক দলের ঐক্যমতে দুই বছরের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি ও ছাত্র-যুব-শ্রমিক অধিকার পরিষদের সমন্বয়ক নুরুল হক নুর।

শনিবার (২৯ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত ‘রাজনৈতিক সংকট : উত্তরণ কোন পথে’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে একটা দলকে সরিয়ে আরেকটা দলকে ক্ষমতায় বসালেই জনগণের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন হবে না। আমরা রাষ্ট্রের কেমন পরিবর্তন চাই, ক্ষমতায় গেলে কীভাবে পরিবর্তন করব সেই রূপরেখাটা জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। যার ভিত্তিতে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হবে। আমরা চাই না একই ব্যক্তি দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি থাকুক। বেশি দিন ক্ষমতায় থাকলে তার মধ্যে স্বৈরাচারী মনোভাব তৈরি হয়। একই সঙ্গে দলীয় প্রধান ও সরকার থাকা যাবে না। আমরা চাই বিচার বিভাগ সর্বোচ্চ স্বাধীনভাবে কাজ করবে। নির্বাচন কমিশন মেরুদণ্ড উঁচু করে কাজ করবে। আমরা মনে করি না যে, কাল একটা নির্বাচন দিলেই এই সংকটের উত্তরণ হবে। তার জন্য একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে দুই বছর দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। যাদের কাজ হবে রাষ্ট্রযন্ত্রের চলমান  অসঙ্গতিগুলোকে সঙ্গতিপূর্ণ লাইনে নিয়ে আসা।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন যেন সর্বোচ্চ ক্ষমতা ভোগ করতে পারে। নির্বাচনী কর্মকর্তারা যেন এসপি কিংবা ডিসির চোখ রাঙানিতে ভয় না পায়। আদালতকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। প্রশাসনসহ সব ক্ষেত্রে নোংরা দলীয়করণের পরিবর্তন করতে হবে। এছাড়া প্রয়োজনীয় আইন ও সংবিধান সংস্কার করে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাধ্যমে একটি ‘ফ্রি-ফেয়ার’ ইলেকশনের দিকে যেতে হবে।

সংকট উত্তরণে জনগণকেও দায়িত্ব নিতে হবে উল্লেখ করে নুর বলেন, আমাদের মানসিকতায় একটা পরিবর্তন আনা দরকার। সব কিছু রাজনৈতিক দল করবে, বিষয়টি এমন নয়। সংকট উত্তরণে শুধু রাজনৈতিক দল নয়, দেশের নাগরিক হিসেবে আপনার-আমারও দায়িত্ব রয়েছে। দেশের আজকের এই পরিস্থিতির জন্য আমি-আপনিও দায়ী। গত বছর বেলারুশে নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে, করোনার মধ্যেও জনগণ মাঠে নেমে এসেছে। কিন্তু আমাদের দেশে ২০১৪ এবং ১৮ সালে এমন দুটো নির্বাচন হয়েছে কিন্তু আমরা ভোটাধিকারের দাবিতে রাস্তায় নামিনি। তাই এ অবস্থার জন্য আমরাও দায়ী। আমি মনে করি, বর্তমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় জনগণকেই মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে।

লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা।

এইচআর/এইচকে