জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট কল্পনাপ্রসূত, এটি বাস্তবায়নযোগ্য নয়।

বৃহস্পতিবার (৩ জুন) বিকালে জাতীয় সংসদের বাইরে বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তব্যের শুরুতে বলেছেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে একটি অস্থিরতা বিরাজ করছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কোনো কিছুই সুনির্দিষ্টভাবে জানা যাচ্ছে না। বিশেষ করে, সামনের দিকে কী হবে তাও ভালোমতো ফোকাস করা যাচ্ছে না। সে কারণে বাজেটে অনেক কিছু তাকে ধারণার বশবর্তী হয়ে করতে হয়েছে। তাই তার বক্তব্য থেকে এটাই মনে হয়েছে যে, সম্পূর্ণ কল্পনাপ্রসূত বাজেট তৈরি করেছেন তিনি। স্বাভাবিকভাবে আমাদের কাছে মনে হয়েছে, এটি অবাস্তবায়নযোগ্য বাজেট।

তিনি আরও বলেন, এই বাজেট সঙ্গে বাস্তবতার সম্পর্ক কমই থাকবে। এই বাজেট কোনোভাবেই বাস্তবায়নযোগ্য হবে বলে মনে হচ্ছে না আমাদের। এর সংশোধন হয়তো সামনে করতে হবে। আমরা মনে করি, এই বাজেট এতোই সংশোধন করতে হবে যে, মূল বাজেটের কোনো রূপরেখা রাখা সম্ভব হবে না।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, গত বছরের বাজেট ছিল ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার। এবার ৩৫ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৮১ কোটি টাকা। কিন্তু রাজস্ব ১০ শতাংশ বাড়িয়েছে। এটার কোনো দরকার ছিল না। কারণ করোনার কারণে অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ। গতবছর যে রাজস্ব ধরা হয়েছিল গত ১০ মাসে সেটা ৬০ শতাংশ আদায় করতে পারেনি। সামনে দুই মাসে কতটুকু পারবে সেটা তারা নিজেরাও জানে না। আমার জানা মতে, বাংলাদেশের ইতিহাসে এতো রেকর্ড পরিমাণ ঘাটতি আর কখনও ছিল না। ৬ দশমিক ২ শতাংশের মতো জিডিপি ঘাটতি বাজেট এর আগে কখনও হয়নি।

তিনি বলেন, করোনার কারণে যারা কর্মহীন ও দারিদ্রসীমার নিচে চলে গেছে তাদের জন্য কর্মসংস্থান বা আর্থিক সহায়তার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা বাজেটে নেই। স্বাস্থ্যখাত নিয়ে মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা ছিল ব্যাপক। ধারণা করা হচ্ছিল এ খাতে ব্যাপক বরাদ্দ বাড়বে। কিন্তু বাস্তবে খুব সামান্যই বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। 

বাজেটে ঘাটতি মেটানোর জন্য যেসব খাত থেকে অর্থ আসবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে তা অনিশ্চিত উল্লেখ করে সাবেক এ বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তারা দেশি বিদেশি বিনিয়োগ খাত থেকে ঋণ  নেওয়ার কথা বলছে। কিন্তু অর্থনীতি যে দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে সামনে কী পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে বলা সম্ভব নয়। কাজেই সার্বিকভাবে মনে করি, এই বাজেট অবাস্তব। যা কোনোভাবেই বাস্তবায়নযোগ্য নয়।

এএইচআর/এসকেডি