ওবায়দুল কাদেরের পুরাতন ছবি

সম্প্রতি নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জার বক্তব্য প্রসঙ্গে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনার ঊর্ধ্বে কেউ নয়, দল করলে সবাইকে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। 

বুধবার (৬ জানুয়ারি) সরকারের টানা এক যুগ পূর্তি উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি আয়োজিত শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জার বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, দলীয় সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া কেউ দলে অপরিহার্য নয়। কোনো বিশেষ ক্ষেত্রে কাউকে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। 

তিনি বলেন, দলের শৃঙ্খলা ভাঙার অভিযোগে যে কোনো সিদ্ধান্ত দলীয় সভাপতি নিতে পারবেন। শেখ হাসিনার ঊর্ধ্বে কেউ নয়, দল করলে সবাইকে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতায় গত ১২ বছরে বাংলাদেশ উন্নয়ন অগ্রগতির সকল সূচকে যুগান্তকারী মাইলফলক স্পষ্ট করছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্ব সভায় উন্নয়নের রোল মডেল, অর্থনীতি ও আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশকে ছাড়িয়ে অগ্রগতির অভূতপূর্ব স্মারক বহন করছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে ও গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপায়নে অর্জন হয়েছে দৃশ্যমান সফলতা। স্বাধীন ভাবে কাজ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। 

তিনি বলেন, করোনার মতো বৈশ্বিক মহামারি নিয়ন্ত্রণ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশ্বে অনুকরণীয় রাষ্ট্রের মর্যাদা পেয়েছে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা, দৃঢ়তা, সাহসিকতা, সততা ও কর্মনিষ্ঠা আজ বিশ্বনন্দিত। একসময়ে তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন ফিরে পেয়েছে ঐতিহ্য। 

কাদের বলেন, পাট রপ্তানিতে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে প্রথম। ইলিশে প্রথম, তৈরি পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয়, অন্যান্য ক্ষেত্রসহ চাল উৎপাদনে ৪র্থ স্থানে প্রিয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং পুলিশ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় রেখে চলছে অনবদ্য অবদান। প্রতিবেশী দেশের সাথে অতীতের অবিশ্বাসের কৃত্রিম দেওয়াল ভেঙে নির্মিত হয়েছে সম্পর্কের নতুন সেতুবন্ধ। সমাধান হয়েছে দীর্ঘদিনের ছিটমহল বিনিময় কার্যক্রম।

তিনি বলেন, সামাজিক এবং যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই যোগাযোগ খাতে রীতিমতো বিপ্লব হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। শতভাগ বিদ্যুৎ, পায়রা বন্দর, মাতারবাড়ি প্রকল্প, গভীর সমুদ্রবন্দর, বছরের প্রথমদিনে পাঠ্যপুস্তক উৎসব প্রধানমন্ত্রীর অবদান। শেখ হাসিনার হাত ধরেই মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণাধীন। স্বপ্নের পদ্মাসেতু এখন দৃশ্যমান। 

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, সরকারের পরিবর্তন হতে পারে কিন্তু সরকারের গৃহীত নীতি এবং পরিকল্পনা থাকবে চলমান। ভিন্ন ভিন্ন দল সরকারে আসতে পারে তবে রাষ্ট্রের লক্ষ্য এবং অর্জনের ধারাবাহিকতা থাকবে গতিশীল। প্রতিহিংসা থাকবে না উন্নয়নে। উন্নয়ন প্রবাহমান জলধারার মতো।

তিনি বলেন, যতক্ষণ শেখ হাসিনা আছেন জনমানুষের পাশে ততক্ষণ কোনো অপশক্তিই দেশকে পিছিয়ে দিতে পারবে না। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা আর শেখ হাসিনার ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। 

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।

এইউএ/এইচকে