মির্জা ফখরুলকে পুরস্কার দেওয়া যেতে পারে : হানিফ
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিদিন একটি করে সংবাদ সম্মেলন করে ইনিয়ে-বিনিয়ে মিথ্যা কথা বলেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
তিনি বলেছেন, সংবাদ সম্মেলন করে তিনি সবাইকে বিভ্রান্ত করতে চান। আমি মির্জা ফখরুল সাহেবকে ধন্যবাদ না দিয়ে পারবো না। মিথ্যা কথা যে আপনি এত চমৎকারভাবে বলতে পারেন, এতে ওনার কথা শুনে আমি মাঝে মাঝে বিভ্রান্ত হয়ে যাই। মিথ্যা বলার পারদর্শিতার জন্য তাকে নিঃসন্দেহে পুরস্কার দেওয়া যেতে পারে।
বিজ্ঞাপন
আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার (১৮ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে আয়োজিত এক স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘৯৫ ফাউন্ডেশন কাজিপুর’ এ স্মরণ সভার আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে হানিফ বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব আপনি অন্যদের নির্যাতনের কথা বলেন। কিন্তু আপনি কি ভুলে গেছেন ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পরে আপনারা কিভাবে আপনাদের দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে নির্যাতন করেছেন আওয়ামী লীগের উপর। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে শুধু হত্যা নয়, আজকে যার স্মরণসভায় এসেছি নাসিম ভাই, যিনি মন্ত্রী ছিলেন তাকেও আপনারা রাজপথে বারবার নির্যাতিত করেছেন, রক্তাক্ত করেছিলেন আপনারা তাকে। তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, আসাদুজ্জামান নূর ও সাবের হোসেন চৌধুরীর মতো মানুষকে আপনারা রাজপথে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছেন। এই সব কি ভুলে গেছেন?
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আপনারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে গাড়িতে আগুন দেন। আপনারা মিথ্যাচার করে বিভ্রান্ত করে মানুষকে বক্তব্য দিচ্ছেন। দিয়ে আবার বলছেন যে কথা বলার অধিকার নেই, তাহলে এতক্ষণ রাজপথে দাঁড়িয়ে আপনারা কী করলেন। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতেন, মিথ্যাচার করছেন, অভিযোগ করছেন, কই আপনাদের কখনো তো আঘাত করা হয়নি। আপনাদের তো বাধাও দেওয়া হয় না। যখন আপনার দলের সন্ত্রাসীরা মানুষের ওপর আক্রমণ করে, ভাঙচুর জ্বালাও-পোড়াও করে, তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে কখনো কখনো আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়। এর বাইরে তো আপনারা নির্বিঘ্নে করে যাচ্ছেন আন্দোলন। আমাদের কি সেই কাজ করতে দিয়েছিলেন?
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, বিএনপির রাজনীতি এখন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। মির্জা ফখরুল ইসলামের কথা শুনে মনে হয় যে উনি বোধহয় বেগম খালেদা জিয়ার চেয়ার মেডিকেল বোর্ডের চেয়ারম্যান। উনি বোধহয় বড় চিকিৎসক। ম্যাডাম খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা কিন্তু একবারও বলছেন না উনার পার্টিকুলার এই রোগের জন্য এই দেশে এই ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে হবে। তারা বলছেন না অথচ বলছেন মির্জা ফখরুল সাহেব। আমাদের দেশে চিকিৎসা সম্ভব না হলে কেউ ভারতে যায়, ব্যাংকক যায়, সিঙ্গাপুর যায়। কিন্তু উনি কোন দেশে যেতে চান সেটা কী বলেছেন, তা বলেন না। বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা তাদের কাছে মূখ্য নয়, চিকিৎসা নিয়ে তাদের নাটক করা, স্ট্যান্টবাজি করা, রাজনীতি করা তাদের মূখ্য উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা বহুবার বলেছি, বেগম জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী, তার সুচিকিৎসা হোক। সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসুক। এটা আমরা চাই, প্রত্যাশা করি।
স্মরণ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সংসদ সদস্য প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয়, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ, সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু, ৯৫ ফাউন্ডেশন কাজিপুরের সভাপতি প্রকৌশলী মো. আবু রায়হান।
এমএইচএন/এনএফ