বাংলাদেশ এখন বিএনপি-আওয়ামী লীগতে দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, যার ফলে যখন একজন ব্যক্তির গুরুত্বপূর্ণ কথা বলছেন, কিন্তু তার কথা গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় না বিএনপি বা আওয়ামী লীগে থাকার কারণে। এই বিষয়গুলো থেকে আমাদের বোধহয় বেরিয়ে আসা দরকার।

শনিবার (১৯ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দল আয়োজিত একটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলে।

মির্জা ফখরুল বলেন, নতুন প্রজন্ম যারা তারা জিয়াউর রহমানকে চেনেন। তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সঠিকভাবে জানে না। এখন তাদের কাছে যেটা শেখানো হচ্ছে, জানানো হচ্ছে, সেটি সম্পূর্ণ একটি বিকৃত ইতিহাস। যখন মানুষ আশা করছে স্বাধীনতার ঘোষণা হবে, যাদের দায়িত্ব ছিল এই স্বাধীনতার ঘোষণা করা তারা কেউ দেয়নি। তাদের কেউ আত্মসমর্পণ করেছিলেন, আবার কেউ পালিয়ে গিয়েছেন। সে সময় তিনি (জিয়াউর রহমান) সেই ঘোষণা (স্বাধীনতার ঘোষণা) দিয়ে গোটা জাতিকে স্বাধীনতার যুদ্ধে নেমে পড়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেছিলেন। এটা কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। তখন উনি কোন পলিটিকাল লিডার ছিলেন না, তার ওপর কোনো দায়িত্বও ছিল না। ওই সময় উনার মধ্যে জাগ্রত হল দিস ইজ দা টাইম, উই মাস্ট রিভল্ট পাকিস্তানি আর্মি। এখানে কিন্তু নেতৃত্বের ব্যাপারটা এসে যায়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে বেশ কিছুদিন ধরে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে একটি ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। সেটি হচ্ছে— জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক ছিলেন না। অনেকে বলেন মুক্তিযুদ্ধ করেননি, অনেকে বলে পাকিস্তানের অনুচর ছিলেন। বিভিন্ন ভাবে তাকে একটা খলনায়কে পরিণত করতে চায়। অনেক বইয়ের মাধ্যমে শিশুদের শেখানো হয় জিয়াউর রহমান একজন কিলার। বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে নাকি জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন। আমরা যারা শহীদ জিয়ার আদর্শে বিশ্বাস করি, আজকে ওটাকে কাউন্টার করতে হবে। এটাতো সঠিক নয় উপরন্তু তারা মিথ্যা বলছে। তারা কেন বলছে, কি কারণে বলছে, এটিও আমাদের বুঝতে হবে।

বর্তমান ছাত্রদের মধ্যে রাজনীতি করতে অনেক অনীহা, সেই বিষয়টি কাটিয়ে ওঠার অনুরোধ জানিয়ে শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা সবাই কিন্তু ছাত্র রাজনীতি করে এসেছি। তখনকার ছাত্রসমাজ এত সমাজ সচেতন ছিল, এত বেশি রাজনৈতিক সচেতন ছিল তাদের মাধ্যমে কিন্তু এদেশে বড় বড় পরিবর্তনগুলো সম্ভব হয়েছে।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, অর্থনীতিবীদ ড. মাহবুব উল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম প্রমুখ।

এমএইচএন/এসএম