ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি (ভিপি) আবু সাদিক কায়েম বলেছেন, আমাদের এখনই সময় জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার। আমাদের এখনই সময় শত্রু ও মিত্রদের চিহ্নিত করার। জুলাই বিপ্লবের পর আমাদের অনেকের মধ্যে ঐক্যের ফাটল ধরেছে। এখনই সময় সেই ফাটল দূর করে ঐকমত্য হওয়ার।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে উপস্থিত থেকে তিনি এসব কথা বলেন।

সাদিক কায়েম বলেন, আমাদের বিপ্লব পরবর্তী বিভাজন ভেঙে আবার ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ভারতের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করার জন্য আমাদের আবারও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের হাদি ভাই এই কাজটি করেছেন। আমাদেরও তার কাজে অংশগ্রহণ করতে হবে।

তিনি বলেন, যে জুলাই বিপ্লবের রক্তের ওপরে দাঁড়িয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে, সেই জুলাই বিপ্লবীর নিরাপত্তা দিতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিজেদের অকৃতকার্য হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। তারা হাদি ভাইয়ের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

এর আগে বিকেল ৩টায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদীর ওপর গুলির প্রতিবাদে এ সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সমাবেশ শুরুর আগেই শহীদ মিনার এলাকায় নেতাকর্মীরা উপস্থিত হয়েছেন। দুপুরের পর থেকেই মঞ্চ গোছানোর কাজ, চেয়ার সাজানো এবং ব্যানার–ফেস্টুন টানানোর মধ্য দিয়ে সমাবেশের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। এ সময় মঞ্চে গান ও কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে হামলার প্রতিবাদ এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে অবস্থান তুলে ধরা হয়।

সমাবেশস্থলে আসা নেতাকর্মীদের অনেকেই হাতে ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে শরীফ ওসমান হাদীর ওপর হামলার ঘটনার নিন্দা জানান এবং দোষীদের বিচারের দাবি তোলেন। আয়োজকরা জানান, এই সমাবেশের মাধ্যমে হামলার ঘটনার প্রতিবাদ জানানো এবং গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে সহিংসতার বিরুদ্ধে অবস্থান স্পষ্ট করা হবে। সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন।

উল্লেখ্য, শরীফ ওসমান হাদী ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক এবং অভ্যুত্থান-অনুপ্রাণিত সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র। তিনি ঢাকার ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন হাদি এবং এ লক্ষ্যে নিয়মিত গণসংযোগ করছিলেন তিনি।

গত ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) জুমার নামাজের পর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে মোটরসাইকেলে করে আসা দুই আততায়ীর একজন চলন্ত রিকশায় থাকা ওসমান হাদির মাথায় গুলি করে। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখান থেকে পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে আজ উন্নত চিকিৎসার জন্য হাদিকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হচ্ছে। তার অবস্থা বেশ সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এমএমএইচ/এমজে