হাদির পথ ধরে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে : সালাম
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম বলেছেন, আন্দোলন শেষ হয়ে যায়নি, বিপ্লব শেষ হয়ে যায়নি। চূড়ান্ত বিজয়ের জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। যেমনিভাবে আমাদের ভাই হাদি রক্ত দিয়ে গিয়েছেন, কিন্তু আপোষ করেননি। আমাদের সবাইকে হাদির পথ ধরে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আমাদের দেশের স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখতে হবে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
আবদুস সালাম বলেন, আমাদের সংগ্রাম ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম। আধিপত্যবাদের পক্ষে যারাই কথা বলবে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। এছাড়া দেশকে আমরা রক্ষা করতে পারবো না। দেশকে আমাদের রক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, আজকে আমাদের যারা অন্য দৃষ্টিতে দেখছেন, তাদেরকে বলবো, বাংলাদেশকে হজম করতে যাইয়েন না। বাংলাদেশকে হজম করা অত সহজ না। বাংলাদেশকে আমরা রক্ত দিয়ে যুদ্ধ করে স্বাধীন করেছি। আজকের রক্ত দিয়ে আমরা ফ্যাসিবাদকে তাড়িয়েছি। প্রয়োজনে এই সংগ্রামকে আরও দীর্ঘায়িত করতে হবে। কিন্তু কোনোভাবেই আপোষের ফর্মুলায় যাওয়া যাবে না।
বিজ্ঞাপন
আবদুস সালাম বলেন, কারা হাদীকে হত্যা করেছে, এটা পরিষ্কার। কিন্তু আমি ধিক্কার জানাই এই সরকার ও পুলিশকে। একটা চিহ্নিত খুনি, যাদের আপনারা চিনেন এবং তার অতীত রেকর্ড আছে, তারপরও কেন এই খুনিকে গ্রেপ্তার করতে পারলেন না। এই ব্যর্থতা কার। হাদির খুনিকে গ্রেপ্তার করতে পারলেন না এটা কি মেনে নেওয়া যায়? ফ্যাসিবাদের দোসরা এখনো বিভিন্ন জায়গায় বসে থাকবে এটা কখনো হতে পারে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, শরীফ ওসমান হাদী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে একটি বিপ্লবের কথা চিন্তা করেছেন। বাংলাদেশের মানুষ বারবার সংগ্রাম করেছে এবং জয়লাভ করেছে। কিন্তু জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা, সেটি পূরণ হয়নি। হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আশার দিক এটাই যে— কেউ কখনো আমাদেরকে দমিয়ে রাখতে পারেনি।
সরকারের উদ্দেশে সালাম বলেন, আমরা বারবার বলেছি ৫ আগস্টের পরে, আপনারা স্বৈরাচারের ‘ভূতকে’ প্রশাসনে, সমাজের বিভিন্ন জায়গায় দায়িত্বে রেখে সফলভাবে দেশ পরিচালনা করবেন, সফলভাবে একটি নির্বাচন করবেন, তারা কখনোই সেটা হতে দেবে না। এখনতো উপদেষ্টারা কিছুটা বুঝতে পারছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রথম দিকে সময়গুলো নষ্ট করেছেন। আমরা বলেছিলাম জুলাইয়ের স্পিরিট থাকা অবস্থায় তাদের সরাতে হবে এবং একটি জাতীয় নির্বাচন, সংস্কার ও বিচার করতে হবে। কিন্তু সে সময় আমাদের কথা আপনাদের ভালো লাগেনি। এখনো বলি— যদি দেশকে রক্ষা করতে হয়, তাহলে জুলাইয়ের স্পিরিট আবারও আমাদের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য আবারও ফিরিয়ে আনতে হবে।
বিএনপি চেয়াপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, এই লড়াই কোনো সাধারণ লড়াই নয়। এই লড়াই হলো আধিপত্যবাদের হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করার লড়াই। এখানে তাদেরও (আ.লীগ) স্বার্থ আছে। তাদের স্বার্থের জলাঞ্জলি এত আগে দিয়ে দিবে, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। যে সমস্ত বুদ্ধিজীবী-সাংবাদিকরা বলা শুরু করেছে যে, আওয়ামী লীগের প্রতি অবিচার করা হচ্ছে, তাদের কেন নির্বাচনে সুযোগ দেওয়া হবে না। যারা যারা এসব কথা বলেছে, তাদেরকে আগে হাদীর হত্যার জবাব দিতে হবে।
নাগরিক সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
ওএফএ/এমএন