বিদেশে খালেদার চিকিৎসা : অনুমতির আবেদনে সময় নেবে বিএনপি
খালেদা জিয়া
উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিতে সরকারের অনুমতির জন্য আবেদন করতে আরও সময় নেবে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার ইস্যুতে আগে কূটনৈতিক বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এরপর সরকারের অবস্থান বুঝে উপযুক্ত সময়ে অনুমতির আবেদন করা হবে।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে চিকিৎসার জন্য দলীয় প্রধানকে বিদেশে নেওয়া কতটা নিরাপদ হবে, সেটিও বিবেচনা করছে বিএনপি। শনিবার (২৬ জুন) বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে আলোচনার পর এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান ঢাকা পোস্টকে জানান, লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, আব্দুল মইন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সেলিমা রহমান।
স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য বলছেন, সর্বশেষ গত ২১ জুন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। আলোচনা ইতিবাচক হলে দলের পক্ষ থেকে আবেদন করা হবে।
বিজ্ঞাপন
খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সুযোগ পেতে অন্যান্য রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষে থেকে বক্তব্য ও বিবৃতির মাধ্যমে সরকারের ওপর একটা চাপ তৈরির চেষ্টা চলবে। এরপর অবস্থা বুঝে উপযুক্ত সময়ে অনুমতির জন্য আবেদন করা হবে
কিন্তু শনিবারের বৈঠকে সেই অবস্থান কিছুটা সরে আসা হয়েছে। বর্তমান সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে বিদেশি বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। তাদের পক্ষে থেকে কী পরামর্শ আসে সেটা পর্যবেক্ষণ করবে বিএনপি।
একইসঙ্গে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সুযোগ পেতে অন্যান্য রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষে থেকে বক্তব্য ও বিবৃতির মাধ্যমে সরকারের ওপর একটা চাপ তৈরির চেষ্টা চলবে। এরপর অবস্থা বুঝে উপযুক্ত সময়ে অনুমতির জন্য আবেদন করা হবে। বৈঠকে দেশের কোভিড পরিস্থিতি ও সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে রোববার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলন করবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ঢাকা পোস্টকে বলেন, ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেওয়া তো সরকারের ওপর নির্ভর করছে। আমরা তো সব সময় সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি যে, তাকে বিদেশি নেওয়ার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে। কিন্তু সেটা সরকার করছে না। আজ বৈঠকে ম্যাডামের স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে মহাসচিব ব্রিফ করেছেন। আগের মতোই তিনি আছেন।
বৈঠকে অংশ নেওয়া এক সদস্য নাম প্রকাশ না করে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়ে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিতে তার পরিবার আবেদন করেছিল। কিন্তু অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাই এখন এ বিষয়ে আগে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এজন্য কিছুটা সময় নেওয়া হবে। এছাড়া বর্তমানে সারাবিশ্বে করোনার সংক্রমণ আবারও বেড়েছে। তাই এ মুহূর্তে তাকে বিদেশে নেওয়া কতটা নিরাপদ, সেটাও বিবেচনা করতে হচ্ছে। আজকের বৈঠকে সুনির্দিষ্ট কোনো এজেন্ডা ছিল না। এক ঘণ্টার মধ্যেই বৈঠক শেষ হয়ে গেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য ম্যাডামকে বিদেশ নিতে সরকারের কাছে আবেদন করা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছি।
বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, জানতে চাইলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, সমসাময়িক রাজনৈতিক ও কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামীকাল (রোববার) এ বিষয়ে মহাসচিব জানাবেন।
এএইচআর/আরএইচ