শ্রমিক-কর্মচারীদের জীবিকা নিশ্চিতের দাবি
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ১ জুলাই থেকে কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছে। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন দেশের কয়েক কোটি শ্রমিক-কর্মচারী। এ পরিস্থিতিতে তাদের জীবন ও জীবিকা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ।
শুক্রবার (২ জুলাই) গণমাধ্যমে সংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হাবিবুল্লাহ বাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলমের পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
এতে বলা হয়, লকডাউনের (বিধিনিষেধ) কারণে নৌযানসহ সব ধরনের পরিবহন শ্রমিক, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, বেকারি, পর্যটন সংশ্লিষ্ট শ্রমিক, লোকাল গার্মেন্টস শ্রমিক, ঠেলা-দিনমজুর, স’মিল, চাতাল, মুদ্রণ, পাদুকা, ক্ষৌরকার, হকার, গৃহকর্মী, দোকান কর্মচারী, নির্মাণ, বারকি, দর্জি শ্রমিকসহ বিভিন্ন খাতের অধিকাংশ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে অনাহার-অর্ধাহারে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন।
দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির এ সময়ে শ্রমজীবী জনগণ দুবেলা দুমুঠো ডাল ভাত জুটাতে পারছে না। গত এক বছরে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন, ৬২ শতাংশ শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন। সরকারের সদ্য পাসকৃত বাজেটে নতুন দরিদ্রদের জন্য কিছুই রাখা হয়নি, এমনকি জনগণের সামাজিক নিরাপত্তায় রেশনিং চালুর জন্যও কোনো বরাদ্দ হয়নি।
বিজ্ঞাপন
কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না নিয়েই সরকার লাখ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক, নসিমন, করিমন, ভটভটি উচ্ছেদের তৎপরতা চালাচ্ছে। করোনাকালে সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল, চিনিকলসমূহ বন্ধ করে দেওয়ার এক বছরেও শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধ করেনি। এ অবস্থায় সরকার জনগণের কোনো দায়দায়িত্ব না নিয়ে ‘কঠোর লকডাউন’ চাপিয়ে দিয়ে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশের ভয় দেখিয়ে জনগণকে গৃহবন্দি করে রাখতে চাইছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সংগঠনের পক্ষ থেকে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় লকডাউন কার্যকরে ঘরে ঘরে খাদ্য, নগদ অর্থ, বিনামূল্যে চিকিৎসা, নিত্যপণ্যে মূল্য কমানো ও সর্বস্তরে রেশনিং চালু, সকল উপজেলায় পিসিআর ল্যাব স্থাপন করে বিনামূল্যে পর্যাপ্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা, ন্যূনতম জেলা পর্যায় পর্যন্ত আইসিইউ বা নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র ও ভেন্টিলেটরসহ সব চিকিৎসা সুবিধার নিশ্চয়তা বিধান, লকডাউনে শ্রমজীবী ও কর্মজীবী জনগণের বেতন ও বোনাস প্রদান নিশ্চিত করা, পণ্যবাহী নৌযানসহ জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিত শ্রমিকদের জন্য ঝুঁকি ভাতা প্রদান, জরুরি ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিষেবায় নিয়োজিত শ্রমিক-কর্মচারীদের টিকাদান কর্মসূচিতে অগ্রাধিকারভুক্ত করা, করোনা পরিস্থিতিতে জনগণের নিকট হতে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির বিল আদায় বন্ধ, এনজিওর কিস্তি আদায় বন্ধ ও সুদ মওকুফ করার দাবি জানাচ্ছি।
এমএইচএন/আরএইচ