সহায়তা না দিয়ে শ্রমজীবী মানুষকে ঘরবন্দি থাকতে বলা অমানবিক
কঠোর লকডাউনে শ্রমজীবী মানুষের দুর্ভোগ চরমে। খাদ্য ও নগদ অর্থ না দিয়ে এই শ্রমজীবী মানুষকে ঘরবন্দি থাকতে বলা অমানবিক বলে দাবি করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
সংগঠনটি বলছে, শ্রমজীবী মানুষের জন্য খাদ্য ও নগদ অর্থ সহযোগিতা না দিয়ে পুলিশ, বিজিবি, সেনাবাহিনী দিয়ে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করা সরকারের নিষ্ঠুর অমানবিক চরিত্রের প্রকাশ। সোমবার (৫ জুলাই) সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।
বিজ্ঞাপন
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার বলছে জীবন বাঁচাতে কঠোর লকডাউন অর্থাৎ সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। এটা হয়তো ঠিক, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে হলে লকডাউনের দরকার আছে। কিন্তু যে শ্রমজীবী মানুষ দিন আনে দিন খায়, হাত চললে পেট চলে এমন হতদরিদ্র মানুষের খাবার নিশ্চয়তা বিধান না করে সেনাবাহিনী পুলিশ দিয়ে কি মানুষকে ঘরবন্দি করে রাখা যাবে? ১ জুলাই থেকে গত ৫ দিনে এটা স্পষ্ট যে, খাবার না দিলে মানুষ করোনার ভয়ে ঘরে বন্দি থাকবে না, থাকছে না। অসংখ্য মানুষ জীবীকার তাগিদে বাইরে বের হচ্ছে, প্রতিদিনই এ সংখ্যা বাড়ছে। আর বাইরে রাস্তায় বের হলেই হতে হচ্ছে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার। প্রতিদিনই গ্রেফতারের সংখ্যা বাড়ছে। লকডাউনে আয় না থাকায় শ্রমজীবী মানুষের আত্মহত্যাও বাড়ছে।
আরও বলা হয়, দুই সপ্তাহ লকডাউনের জন্য একটি পরিবারকে ১০ কেজি চাল, ৩ কেজি ডাল, ৫ কেজি আলু, ২ লিটার তেল এবং নগদ ৫০০ টাকা করে দিলে মোট ২০০০/২৫০০ টাকা অর্থাৎ ২ কোটি মানুষের জন্য মোট ৫/৬ হাজার কোটির প্রয়োজন হতো। এ টাকা দেওয়ার সামর্থ্য কি সরকারের নেই? ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট যে সরকার করতে পারে? আসলে এটা সামর্থ্যের ব্যাপার না, দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। বর্তমান সরকার তো জনগণের সরকার না, লুটপাটকারী ধনী বণিকদের স্বার্থ রক্ষাকারী সরকার। সরকার কঠোর লকডাউনে গণপরিবহনসহ সবকিছু বন্ধ রাখলেও পোশাক কারখানা খোলা রেখেছে। যদিও বলা হয়েছে মালিকরা শ্রমিকদের জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা করবে। কিন্তু দুই একটি বড় কারখানা ছাড়া কেউই শ্রমিকের যাতায়াতের ব্যবস্থা করেনি। এজন্য সরকারের কোনো তদারকিও নেই। ফলে পোশাক শ্রমিকদের দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে কষ্ট করে যেতে হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য ও সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী)’র সাধারণ সম্পাদক মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পদক মোশরেফা মিশু, ওয়ার্কার্স পার্টির (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক।
এমএইচএন/এসকেডি