বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্মদিন সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য অরাজনৈতিক, শিষ্টাচার বিবর্জিত বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে এক দোয়া মাহফিলে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

বিএনপির উদ্যোগে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৭৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার আরোগ্য, দীর্ঘায়ু ও মুক্তি কামনায় এবং সারাদেশে করোনাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়াদের আত্মার মাগফেরাতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। 

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের বুকের উপর যে অবৈধ সরকার আওয়ামী লীগ চেপে বসে আছে, তার সাধারণ সম্পাদক দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার জন্মদিন সম্পর্কে একেবারে অরাজনৈতিক, শিষ্টাচার বিবর্জিত কথা বলেছেন। আমি তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

শনিবার (১৪ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় শোক দিবস ১৫ আগস্টের দিন ভুয়া জন্মদিন পালন করে খালেদা জিয়া জাতির সঙ্গে প্রতিবছর তামাশা করেন। ম্যাট্রিকুলেশন সনদ অনুযায়ী খালেদা জিয়ার জন্ম তারিখ ৯ আগস্ট ১৯৪৫, বিবাহ সনদে ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৫, পাসপোর্ট সনদে ১৯ আগস্ট ১৯৪৫। আবার তিনিই দাবি করেন ১৫ আগস্ট ১৯৪৫ তার জন্মদিন! একজন মানুষের এতোগুলো জন্মদিন থাকা নিয়ে দীর্ঘদিনের রহস্য এখন নতুন করে খালেদা জিয়াই উন্মোচিত করেছেন। অবশেষে করোনা পরীক্ষার জন্য দেওয়া তথ্যে জানা গেলো খালেদা জিয়ার জন্মদিন ৮ মে ১৯৪৬।

খালেদা জিয়ার প্রতি সরকারের প্রতিহিংসামূলক আচরণ করছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে একটা মিথ্যা মামলায়, যেটা ১/১১ অবৈধ সরকারের আমলে দায়ের করা হয়েছিল, সেই মামলায় সাজা দিয়ে তাকে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে শুধুমাত্র জনগণ থেকে দূরে রাখার জন্য, রাজনীতি থেকে দূরে রাখার জন্য তাকে অন্তরীণ করে রেখেছে। আমরা দেখেছি কী নিদারুণ যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে তিনি প্রায় তিন বছর এই অন্তরীণ একটা অবস্থা অতিক্রম করছেন। এর মধ্যে তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে অত্যন্ত গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সেই সময়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে বলা হয়েছিল তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেওয়ার। সেটাও সরকার তাকে যেতে দেয়নি।

তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য অনুমতি না দেওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে যে, জনগণের নেত্রীকে জনগণের সামনে আসতে না দেওয়া এবং তিনি যেন রাজনীতিতে সক্রিয় হতে না পারেন। সেজন্য ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত তারা করছে। আমরা বিশ্বাস করি, ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ব্যর্থ হবে এবং তিনি আবার জনগণের সামনে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট দানবীয় শক্তিকে পরাজিত করতে নেতৃত্ব দেবেন।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিলে বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান ও আবদুস সালাম প্রমুখ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন-বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শিরিন সুলতানা, মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ। 

এএইচআর/জেডএস