নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, আপনারা (শিক্ষকরা) শিক্ষা জাতীয়করণের জন্য বলছেন কিন্তু সরকার দায়িত্ব নিচ্ছে না। আমি বিশ্বাস করি, এ দেশ যদি কেউ বদলাতে পারে তা পারেন আপনারা (শিক্ষকরা)। আমি যদি ক্ষমতায় যাই তাহলে বাংলাদেশের শিক্ষা সর্বজনীন করব। শিক্ষা সর্বজনীন বলতে শিক্ষকদের এবং শিক্ষার সব কিছুর দায়িত্ব রাষ্ট্র নেবে।

মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ও বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

মান্না ব‌লেন, আমার দল ক্ষমতায় যাবে কি যাবে না আমি তা জানি না, কিন্তু এই সরকার বেশি দিন থাকবে না। অচিরেই বিদায়ের ঘণ্টা বেজে যা‌বে। এ সরকার পতনের পর কে আসবে? ক্ষমতায় যেই আসুক, আমি তার চোখে আমার স্বপ্ন বুনে দিতে চাই। বাঙালি জাতি এত মেধাবী, যদি ঠিকমতো শিক্ষা পায় তাহলে তারা দেশ বদলে দিতে পারবে।

মান্না ব‌লেন, আজ ইউনিসেফ, জাতিসংঘসহ অধিকাংশ সংস্থা বলে জিডিপির অন্তত ৬ শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় করা হোক। আমাদের এখানে কত টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়? বাজেটের ২ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে শিক্ষাখাতে। খেয়াল করবেন ছাত্রদল যখন মিছিল বের করে ওই মিছিল ঠান্ডা করার জন্য যে পুলিশকে ব্যবহার করা হয় সেটাও শিক্ষাখাতের বাজেট থেকে ব্যয় করা হয়। 

তি‌নি আরও ব‌লেন, আমাদের ৬ লাখ কোটি টাকার বাজেট, আমরা নিজেরাই তো উপার্জন করতে পারি। সারা পৃথিবীতে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির কথা বলেন, ইউরোপ-আমেরিকার বড় বড় ইউনিভার্সিটির কথা বলেন, সেখানে গবেষণা হয়। তারা তাদের গবেষণা করতে দেয়। কোথায় কী ভালো চলবে সে গবেষণা চলে। তারা গবেষণা করে এবং তারা মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার উপার্জন করে। আমাদের এখানে গবেষণা করে কে? পুলিশ বিভাগের উন্নতি কীভাবে করা যাবে তা পুলিশের অফিসারকে গবেষণা করতে দেওয়া হয়।  

মান্না ব‌লেন, গবেষণার জন্য এ পর্যন্ত কত টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মান হারিয়েছে। ঢাবিতে গবেষণা প্রায় বন্ধ। গবেষণায় যদি উপার্জন করতে পারি, তাহলে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা বদলে দিতে এত কষ্ট হওয়ার কথা নয়। আমরা যদি করোনার টিকা আবিষ্কার করতে পারতাম তাহলে ভাবেন কত বড় উপার্জন বাংলাদেশের করা সম্ভব ছিল। প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতায় বলেন, আমি টাকা বরাদ্দ দিয়েছি ওষুধ আমরাই তৈরি করব, কিন্তু কখন? যখন সব ভাইরাস মরে যাবে তখন ওষুধ বানাবেন? সবকিছু নিয়ে ভণ্ডামি করা হয়।

তি‌নি ব‌লেন, উনি (শেখ হাসিনা) বলেছেন বিএনপিকে কে ভোট দেবে? জনগণ তাদের যদি ভোট না দেয় তাহলে ডাকাতি করেন কেন? এক কথায় তারা মূলত ক্ষমতায় থাকতে চায়।

শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন একাংশের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ।

এমএইচএন/এসকেডি