সরকারের সব রসুনের গোড়া এক বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বলেছেন, পরিবহন সংগঠনের সব মালিকরা একই দলের। সরকার তেলের দাম বৃদ্ধি করেছে। অন্যদিকে মালিক-শ্রমিকদের দিয়ে ধর্মঘটের নামে নাটক করিয়েছে ভাড়া বৃদ্ধির জন্য।

সোমবার (৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন।

নুর বলেন, বিশ্ববাজারে দাম বাড়লে দেশেও সামঞ্জস্য রেখে বাড়তে পারে। তাই বলে হঠাৎ করেই ২/৩ টাকা নয়, একেবারে ১৫ টাকা ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা যুক্তি হিসেবে বলেছে, হঠাৎ করেই বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়ে গিয়েছে। গত দেড় বছর বিশ্ববাজারে তেলের দাম (বৃদ্ধি) শূন্যের কোঠায় ছিল। এর আগেও বিশ্ববাজারে তেলের দাম কয়েকবার কমেছে। কিন্তু সরকার যে দাম বাড়িয়েছিল সেটি আর কমেনি। তখনও সরকার তেলের দাম ২৪ টাকা বাড়িয়ে ছিল, সেটি আর কমেনি। 

তিনি বলেন, অনেক সমালোচনার পর ২০১৬ সালে ৩ টাকা কমিয়েছিল। সেই হিসেবে গত সাত বছরে সরকার ৪০ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে। বর্তমান দামে যদি সরকার লোকসান দেয়, তাদের লোকসান হবে প্রতিদিন ২০ কোটি টাকা। বছরে ৬ হাজার কোটি টাকা। গত ছয় বছরে যে লাভ করেছে সেই লাভ দিয়ে এই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যায় আগামী ৬ মাস।

তিনি আরও বলেন, সরকারের অবস্থা দেখেন, জনগণ রাস্তায় নামবে বলে আগেই পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা আগেই বলেছিলাম, তেলের দাম কমানোর আন্দোলনকে আমরা স্বাগত জানাই, তবে ভাড়া বৃদ্ধির আন্দোলনকে স্বাগত জানাতে পারছি না। এর আগেও আমরা দেখেছি অন্যান্য দলের সমাবেশ থাকলে পরিবহন অটোমেটিক্যালি বন্ধ হয়ে যায়। বিভিন্ন সংগঠন ও সরকার সব  একরকম। সরকার মালিক-শ্রমিকদের দিয়ে ধর্মঘটের নামে নাটক করেছে। জ্বালানির দাম বেড়েছে ২৩ শতাংশ আর ভাড়া বাড়িয়েছে ২৭ শতাংশ।

নুর দাবি জানিয়ে বলেন, জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য কমাতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। এই জনবিচ্ছিন্ন সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে জনগণের কষ্ট তত বাড়বে, জনগণের দুর্ভোগ তত বাড়বে। কাজেই মাফিয়াদের বিদায় করার জন্য যে সংগ্রাম প্রয়োজন সেই আন্দোলন-সংগ্রাম আমাদের গড়ে তুলতে হবে।

দলের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া বলেন, নৌকা নয়, এটি একটি জলদস্যুর সরকার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা একটি লাইসেন্স- দেশকে লুট করার, মানুষকে অত্যাচার এবং ক্ষমতায় থাকার। এ সরকারের বিরুদ্ধে যারা দাঁড়ায়, তাদের স্বাধীনতার বিরোধী বলে। আমরা স্বাধীনতার বিরোধী না, অত্যাচারী অবৈধ এবং অসৎ একটা সরকারে বিরোধী। ২৭ শতাংশ দাম বাড়ানোর যুক্তি তাদের (সরকারের) নেই।

তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন লোক দালালি করে তেলের দাম বাড়িয়েছে। সরকারি কোনো তথ্য, পরিসংখ্যান আমরা বিশ্বাস করি না। আমাদের বিদেশি রিজার্ভ সাড়ে সাত বিলিয়ন ডলার, তারা বেশি বলেছে। এটা অদক্ষতার জন্য বলেছে। অশিক্ষিত, অদক্ষ লোককে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে না রাখাই ভালো।

রেজা কিবরিয়া বলেন, আমাদের রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশের পর বিভিন্ন জেলায় মিছিল হয়েছে। সেই মিছিলে কিছু পুলিশ এবং রাজনৈতিক নেতারা বাধা দিয়েছে। এত ভয় কীসের? জনগণকে ভয় পাওয়া উচিত, সেটা ঠিক। জনগণের রাগ যদি বাড়ে, তখন আপনারা আপনাদের সৈন্য দিয়ে, আপনাদের গুণ্ডাবাহিনী দিয়ে (টিকে) থাকতে পারবেন না। সেই সময়টা বেশি দূরে না।

এমএইচএন/এইচকে