নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নিহত নূর হোসেন হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের।  

বুধবার (১০ নভেম্বর) জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ দাবি জানান।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, কেন নূর হোসেন হত্যার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হলো না? আজ দেশের মানুষ জানতে চায়, কেন নূর হোসেন হত্যায় মামলা হলো না? ১৯৯১ সালের পর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নামে অসংখ্য মামলা হয়েছে কিন্তু নূর হোসেন হত্যার মামলা হলো না কেন?  

জিএম কাদের বলেন, এখন মনে হচ্ছে জাতীয় পার্টির দুর্নাম করতেই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নূর হোসেনকে হত্যা করা হয়েছে। 

প্রয়াত নূর হোসেনের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তিনি বলেন, নূর হোসেন বুকে ও পিঠে যে শ্লোগান লিখেছিলেন আজ আমরাও সেই শ্লোগান দিচ্ছি। আজ আমরাও বলছি, ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক।’ আমরা নূর হোসেন হত্যার বিচার চাই। 

সরকার দেশের মানুষের কষ্ট বোঝে না বলেই অযৌক্তিকভাবে তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন সাবেক এই মন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকার আবারও পরিবহন খাতের সঙ্গে নাটকের মাধ্যমে ধর্মঘট ডেকে সড়ক ও নৌপথের ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে। ভাড়া যা বাড়িয়েছে তার প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু এইগুলো দেখার কেউ নেই। তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়ে যাবে, মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে।

বিশ্ববাজারে তেলের দাম প্রতিদিনই ওঠানামা করে বলে জানিয়ে সাবেক এই বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, তেলের দাম কমলে তখন তো দেশে তেলের দাম কমানো হয় না। করোনাকালে অনেক কমদামে তেল কিনে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যবসা করেছে সরকার। এখন ভতুর্কি দিয়ে হলেও তেলের দাম কমাতে হবে। 

হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ তার শাসনামলে কখনোই তেলের দাম বাড়াতেন না বলে দাবি করে ভাই জিএম কাদের বলেন,  তিনি সব সময় ভতুর্কি দিয়ে তেলের দাম মানুষের ক্রয়ের সহনীয় পর্যায়ে রেখেছেন। বর্তমানে তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে গণবিরোধী সিদ্ধান্ত।

তিনি আরও বলেন, ১৯৮৬ সালের ১০ নভেম্বর সামরিক আইন তুলে দিয়ে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গণতন্ত্রের দ্বার উন্মোচন করেছেন। ১৯৯১ পরে দুটি দল গণতন্ত্রের নামে জনসাধারণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তারা গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করেনি। গণতন্ত্রের কথা বলে জনগনের সঙ্গে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তা রক্ষা করেনি। 

এ সময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই। দেশের মানুষকে গণতন্ত্রের প্রকৃত স্বাদ ফিরিয়ে দিতেই জাতীয় পার্টির রাজনীতি।

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জাপার কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সালমা ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, নাজমা আখতার প্রমুখ।

এদিকে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়েছেন টেনিস ফেডারেশনের খেলোয়াড় এবং টেনিস এলিট ১৬ এর কোচ সৈয়দা জাকিয়া আফরোজ হিয়া।

জাপা চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী জানান, দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে পার্টি গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের হাতে ফুল দিয়ে অনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন তিনি।

এএইচআর/আইএসএইচ