বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ৭৪তম জন্মদিন আজ। ১৯৪৮ সালের এই দিনে (২৬ জানুয়ারি) ঠাকুরগাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। 

আনুষ্ঠানিকভাবে কখনও জন্মদিন পালন করেন না বিএনপির মহাসচিব। প্রতিবারের মতো এবারও অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বড় মেয়ে মির্জা শামারুহই প্রথমে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছে বাবা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে।

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) মির্জা ফখরুল ঢাকা পোস্টকে বলেন, কয়েকদিন আগেই করোনা থেকে মুক্ত হয়েছেন তিনি। এখন রাজধানীর উত্তরার বাসাতে আছেন। আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব এবং দলীয় নেতাকর্মীরা জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

এর আগে একবার মির্জা ফখরুল ঢাকা পোস্টকে বলেছিলেন, আমি কখনও জন্মদিন পালন করি নাই। ছোটবেলায় মা-বাবাও কখন আমার জন্মদিন পালন করেন নাই। তখন এসব জন্মদিন পালনের সংস্কৃতি ছিল না। এখনও তো অনেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায়। অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বড় মেয়ে মির্জা শামারুহর প্রথম শুভেচ্ছা জানান। সে-ই প্রতিবছর আমার জন্মদিনটি মনে করিয়ে দেয়। 

বুধবার মধ্যরাতেই দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান। তিনি জানান, ১৯৪৮ সালের ২৬ জানুয়ারি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জন্মগ্রহণ করেন। সেই হিসেবে আজ তার ৭৪তম জন্মদিন। মহাসচিবের জন্মদিনে দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে।

এক নজরে মির্জা ফখরুল

মির্জা ফখরুল ২০১৬ সালে বিএনপির মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি ২০০৯ সালে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব নির্বাচিত হয়ে বিরোধীদলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালের মার্চে দলের মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যুর পর তিনি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পান। টানা পাঁচ বছর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালনের পর ২০১৬ সালের বিএনপির কাউন্সিলে তাকে পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব করা হয়। 

বাংলা উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, মির্জা ফখরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালেই বাম ধারার ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের সময় ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি। করেছেন মুক্তিযুদ্ধও। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিসিএস দিয়ে অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে ঢাকা কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। আরও কয়েকটি কলেজ ঘুরে পরে সরকারের পরিদর্শন ও আয়-ব্যয় পরীক্ষণ অধিদপ্তরে নিরীক্ষক হিসেবে কাজ করেন। তবে সাত বছরের মধ্যে রাজনীতিতে আবারও ফিরে আসেন। জিয়াউর রহমান সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী এস. এ. বারীর ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। 

এরপর ক্ষমতার পালাবদল ঘটলে নিজ জেলা ঠাকুরগাঁও ফিরে গিয়ে আবার শিক্ষকতা শুরু করেন মির্জা ফখরুল। ১৯৮৮ সালে আবারও শিক্ষকতা ছেড়ে রাজনীতিতে ফিরে নির্বাচিত হন ঠাকুরগাঁও পৌরসভার চেয়ারম্যান। এক বছর পরে যোগ দেন বিএনপিতে। ১৯৯১ ও ১৯৯৯ সালে বিএনপির টিকিটে জাতীয় সংসদে নির্বাচন করে জয় না পেলেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ২০০১ সালে। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে প্রথমে কৃষি মন্ত্রণালয় ও পরে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। 

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হলেও সংসদে যোগ দেননি মির্জা ফখরুল। 

এএইচআর/এইচকে