কানাডার বাংলাদেশ দূতাবাসে অভিবাসীরা পাসপোর্ট, ভিসা, নো-ভিসা পেতে অনেক জটিলতা ও ভোগান্তির সম্মুখীন হচ্ছেন। এর প্রতিবাদে ‘বাংলাদেশি কানাডিয়ান নাগরিক অধিকার ফোরাম’ এর আহ্বানে কানাডার স্থানীয় সময় রোববার (৬ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল রহমানের সভাপতিত্বে টরন্টোতে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, পেশাজীবী সংগঠনের নেতা ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় উপস্থিত প্রবাসীরা নাগরিক নো-ভিসা প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তিতে তাদের দুর্ভোগ ও হয়রানির কথা ক্ষোভের সঙ্গে তুলে ধরেন। কেউ কেউ অনলাইন আবেদনে সার্ভারে সমস্যা, ভিসা প্রাপ্তিতে দীর্ঘ সূত্রতার কথা উল্লেখ করেন। নতুন পাসপোর্ট ও পাসপোর্ট নবায়নে ফেসবুক আইডি ও ইউটিউব লিংক প্রদান বাধ্যতামূলক করার তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। বলেন, এটা মানবাধিকার ও ব্যক্তিস্বাধীনতার পরিপন্থি।

অনেকে বলেন, আমরা দেশে রেমিটেন্স পাঠাই। বাংলাদেশ ভ্রমণে আমাদের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশ সরকারও প্রবাসীদর জন্য নানা কল্যাণমূলক ও প্রণোদনামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করছে। শুধুমাত্র কানাডার বাংলাদেশ দূতাবাস কর্মকর্তার করা নিয়মে নো-ভিসা প্রদানে জটিলতার কারণে অনেক ব্যক্তি-পরিবার দেশ যেতে পারছে না। মৃত্যুপথযাত্রী অসুস্থ বাবা-মা আত্মীয়-স্বজনদের পাশে থাকতে পারছে না। বাংলাদেশও প্রবাসীদের মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সভায় বক্তারা বলেন, কানাডার বাংলাদেশ দূতাবাসের সেবায় আগের যে ধারা-মান বজায় ছিল তা অবিলম্বে পুনরায় চালু করতে হবে। নো-ভিসা প্রদানে, পাসপোর্ট করা, নবায়ন ও অন্যান্য সুবিধা প্রদানে কোনো জটিলতা, আমলাতান্ত্রিকতা ও দুর্ভোগ গ্রহণযোগ্য নয়। বিশ্বব্যাপী প্রবাসী নাগরিকদের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে সিদ্ধান্ত, আইন ও নীতিমালা আছে, তার বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত প্রবাসীরা মানবে না/গ্রহণ করবে না। বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্তকেই কানাডার বাংলাদেশ দূতাবাসকে অনুসরণ করতে হবে।

সভায় সর্বসম্মতভাবে হাইকমিশনারকে কিছু বিষয়ে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়— 

১। প্রবাসী বাংলাদেশি কানাডিয়ানদের নো-ভিসা প্রাপ্তি আগের মতো অবিলম্বে সহজ করা হোক

২। আগের কানাডিয়ান পাসপোর্টে নো-ভিসা সিল থাকলে পুনরায় তাদের নতুন পাসপোর্টে ভিসা দিতে হবে।

৩। দূতাবাসের সেবা অনলাইন সহজিকরণ করা, সার্ভারে সার্বক্ষণিক একসেস এবং অফিসের সময়সূচিতে ফোন সার্ভিস রাখতে হবে। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেও আবেদনের ব্যবস্থা রাখা হোক।

৪। পাসপোর্ট নবায়ন ও নতুন পাসপোর্ট আবেদন/প্রাপ্তি সহজ করা হোক।

৫। বাধ্যতামূলক ফেসবুক আইডি ও ইউটিউব লিংক দেওয়ার নিয়ম বাতিল করা হোক।

সভায় আলোচনায় অংশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেন— আহাদ খন্দকার, শওগাত আলী সাগর, এম আর জাহাঙ্গীর, লিটন মাসুদ, নওশের আলী, আহমেদ হোসেন, ড. মঞ্জুরে খোদা, মাহবুব চৌধুরী রনি, সাদ চৌধুরী, ফারজানা চৌধুরী বিন্দু, হাজি সেলিম, সুমন জাফর, আপন কাজি, শেখ আশফাক দুলাল, রেজা সাত্তার, ড. হানিফ, মিসবাউল কাদের ফাহিম, রিফাত চৌধুরী, হুমায়ুন কবীর, দীন ইসলাম, বাবলু চৌধুরী, হাবিব চৌধুরী মারুফ, মকবুল হোসেন মঞ্জু, আহমেদ হোসেন লনি, আমিনুর চৌধুরী বাবু, রাফি চৌধুরী, সাকিল আহমেদ, ইউসুফ তালুকদার, সৈয়দ মাহবুব, একেএম সেলিম, ফরহাদ নাঈম, আজমল মিয়া, দেওয়ান হক, রফিক প্রমুখ।

এসএসএইচ