১ জুলাই ছিল কানাডার ১৫৫তম জন্মদিন। প্রতিবছর দিনটি কানাডা ডে হিসেবে পালিত হয়। এ বছরও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে দিবসটি উদযাপিত হয়েছে। বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের সঙ্গে এ আয়োজনে যোগ দেন প্রবাসী বাঙালিরাও। 

কানাডার জনসংখ্যা ৩৮ মিলিয়ন। ১৯৭১ সালে কানাডাই বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ঘোষণা দেয় মাল্টিকালচারিজমের, যার মূলমন্ত্র হলো সকল নাগরিকের সমান অধিকার ও দায়িত্ব।

জন্মলগ্ন থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১৮ মিলিয়নের বেশি মানুষ অভিবাসী হয়ে কানাডায় গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। কানাডা শান্তি রক্ষায় সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে আসছে। কানাডাবাসী সভ্য
জাতি হিসেবে পরিচিত। কানাডার ইমিগ্রেশন সংস্থার হিসেব অনুযায়ী প্রতিবছর প্রায় ৪ লাখ অভিবাসন প্রত্যাশী পাড়ি দেয় কানাডায়। দিন দিন এর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

দিবসটি উপলক্ষে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো শুভেচ্ছা বাণী দিয়েছেন।  
দিবসটি উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠান শুরু হয় জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে। এরপর কেক কাটা, শিশু-কিশোরদের ফেসপিন্ট, জর্লি জাম্পসহ বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা ছাড়াও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

কানাডার ‘নতুন দেশ’ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর বলেন, বহু সংস্কৃতির দেশ কানাডা তার অভিবাসী নাগরিকদের নিজ নিজ দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং ইতিহাসকে ধারণ করতে চায়। কানাডা ডে উদযাপনে নাগরিকদের নিজ নিজ দেশের ঐতিহ্যের, গৌরবের গল্পগাথা তুলে ধরার উৎসাহ দেওয়া হয়। বিভিন্ন শহরে বাংলাদেশি কানাডীয়ানরা সে সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে, বাংলাদেশকে তুলে ধরেছে কানাডার মূলধারার সংস্কৃতিতে। কানাডা ডে কানাডার জন্মদিন হলেও বাংলাদেশি কানাডিয়ানদের জন্য এটি নিজ দেশের ঐতিহ্যকে তুলে ধরার একটি  প্লাটফরমে পরিণত হয়েছে।

কানাডার ‘সিবিএনএ২৪’ এর প্রধান সম্পাদক সদেরা সুজন বলেন, খুবই ভালো লাগছে বাংলাদেশি কানাডিয়ান হয়ে কানাডার ১৫৫তম জন্মদিনে অংশগ্রহণ করতে পেরে। বাংলাদেশ ও কানাডার দু'দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে- কানাডার ১৫৫তম জন্মদিনে এটাই আমার প্রত্যাশা।

ক্যালগেরির এবিএম কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট এবং বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ড.মো. বাতেন বলেন, দূর প্রবাসে থাকলেও মাতৃভূমি আমাদের হৃদয়ে ,দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা আমাদের আশার আলো দেখায়। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম রোল মডেল দেশ। কানাডার জন্মদিনে আমাদের প্রত্যাশা প্রচুর সংখ্যক বাঙালি এদেশে আসুক জ্ঞান অর্জনের জন্য এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখুক।

উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মো. মাহমুদ হাসান বলেন, বহুজাতিক সংস্কৃতির মেলবন্ধনে মানবিক সমাজ ব্যবস্থার প্রকৃষ্ট উদাহরণ কানাডা। শান্তি, সাম্য আর সমৃদ্ধির পথে কানাডা আরও বহুদূর এগিয়ে যাবে। এটিই আজকের প্রত্যাশা। 

বাংলাদেশ কানাডা এসোসিয়েশন অব ক্যালগেরির সভাপতি মো. রশিদ রিপন বলেন, কানাডার ১৫৫তম জন্মদিনে এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে প্রাণঢালা অভিনন্দন। অভিবাসন প্রক্রিয়ায় প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশিকে কানাডায় 
আমরা প্রত্যাশা করি, সেই সাথে বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হোক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। 

বালাদেশ কানাডা এসোসিয়েশন অব ক্যালগেরির সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত বসু বলেন, আমরা গর্বিত এবং আনন্দিত যে বাংলাদেশ আজ অনেক দূরে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিযোগিতা করছে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে। কানাডার ১৫৫তম জন্মদিনে অনেক শুভেচ্ছা।

সিলেট এসোসিয়েশন অব ক্যালগেরির সভাপতি রূপক দত্ত বলেন, আমরা আনন্দিত যে কানাডায় বসে কানাডার ১৫৫তম জন্মদিনে অংশ নিতে পারছি। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশি এদেশে এসে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করুক, এমনটাই কামনা করছি।

সিলেট এসোসিয়েশন অব ক্যালগেরির সাধারণ সম্পাদক কয়েস চৌধুরী বলেন, আমরা যারা অভিবাসী হয়ে এদেশে আসি সবারই হৃদয় পড়ে থাকে নিজ দেশে। দেশের উন্নয়ন আমাদের গর্বিত করে,বিশ্বের কাছে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে। কানাডার ১৫৫তম জন্মদিনে অফুরন্ত ভালোবাসা। দীর্ঘজীবী হোক কানাডা।

ক্যালগেরি বঙ্গীয় পরিষদের সভাপতি জয়দীপ সান্যাল বলেন, বাংলাদেশ যেমন আমাদের অহংকার, পাশাপাশি কানাডাও আমাদের কাছে অহংকার। কানাডার জন্মদিনে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, বাংলাদেশকে যে কটি দেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল কানাডা তাদের মধ্যে অন্যতম দেশ।

বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী কিরন বণিক শংকর বলেন,বিশ্ববাসী আজ বাংলাদেশ নিয়ে ভাবছে। আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রবাসী হয়েও আমরা বাংলাদেশকে নিয়ে গর্ব করি, অহংকার করি। 

ক্যালগেরির প্রবাসী লেখক বায়াজিদ গালিব বলেন, কানাডার জন্মদিনে আমরা চাই বাংলাদেশ ও কানাডার সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হোক।

১৯৭১ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে যেসব দেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম কানাডা। সেই কানাডার জন্মদিনেই দেশটির আরও উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি হোক, প্রচুর সংখ্যক বাঙালি এখানে এসে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এবং প্রবৃদ্ধিতে বিরাট ভূমিকা রাখুক, এমনটাই প্রত্যাশা এখানকার প্রবাসী বাঙালিদের। 

এনএফ