জার্মানির বার্লিনে বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে। সোমবার (১৫ আগস্ট) স্থানীয় পাঁচ তারকা হোটেল ওয়ার্লডর্ফ এস্টোরিয়ার বলরুমে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, অনারারি কনসালসহ জার্মানির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির উপস্থিত অতিথিদের নিয়ে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।

সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে হোটেল ওয়ার্লডর্ফ এস্টোরিয়ার বলরুমে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ই আগস্টের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন শেষে দুই দেশের জাতীয় সংগীত বাজিয়ে আলোচনা পর্বের সূচনা করা হয়। 

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে পাঠানো জাতীয় নেতাদের বাণী পাঠ করার পর ১৫ আগস্টের নির্মম ঘটনাবলী, প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা ও নিষ্ঠুর এই হত্যাকাণ্ডের পর বিশ্বের বরেণ্য ব্যক্তিদের অনুভূতির ওপর নির্মিত কয়েকটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

আরও পড়ুন: ভাইরাল পাকিস্তানি যুবকের সঙ্গে দেখা করলেন দুবাইয়ের ক্রাউন প্রিন্স

রাষ্ট্রদূতের সঞ্চালনায় উন্মুক্ত আলোচনা অংশে অতিথিরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে অনুভূতি ব্যক্ত করেন। তাদের বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু, তার আদর্শিক জীবন ও দেশের জন্য তার অমলিন ভালোবাসা, আত্মত্যাগ বিষয় উঠে আসে।

বক্তারা জাতির জনকের মহীয়ান জীবন ও বাংলাদেশের জন্য তার অবদান শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ‘সোনার বাংলা’ গড়া, যেই স্বপ্ন পূরণের পথে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সারা পৃথিবীর কাছে ‘উন্নয়ন বিস্ময়’ হয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত জাতির জনকসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, এ মহান নেতা বাংলার মানুষের স্বাধিকার আদায় ও আমাদের একটি মানচিত্র এবং পতাকা দেওয়ার জন্যে তার সারা জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু ও তার আত্মীয় পরিজনের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনাবহুল ১৫ আগস্টের মতো মর্মান্তিক অধ্যায় স্বাভাবিক মানবিক বোধ সম্পন্ন যেকোনো মানুষকে ব্যথাতুর করে তোলে। তবে বাংলাদেশ সেই শোক আর কষ্ট বুকে চেপে ধরেও সোনার বাংলা গড়ার প্রচেষ্টায় পিছিয়ে পড়েনি। সব হারানোর ব্যথা বুকে নিয়েই আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশকে ইতোমধ্যেই একটি মধ্যম আয়ের দেশ আর ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

এই সরকার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন, অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বলিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ কূটনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠায় স্ব-স্ব অবস্থান থেকে অবদান রাখার জন্য তিনি সবাইকে আহ্বান জানান।

পরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ১৫ আগস্টের শহীদ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।

এসএসএইচ