সিডনিতে মাতৃভাষা স্মৃতিস্তম্ভ নিয়ে দ্বন্দ্ব
স্মৃতিস্তম্ভের সামনে বাংলাদেশি কমিউনিটির কয়েকজন
অস্ট্রেলিয়ায় মাতৃভাষা সংরক্ষণ ও ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে একুশে ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন হয়েছে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতিস্তম্ভ। এ স্তম্ভ ঘিরে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। সুশীলদের অনেকেই বলছেন, নকশা নিয়ে আপত্তি রয়েছে।
নকশা নিয়ে সমালোচনায় বিপাকে পড়েছেন স্তম্ভ নির্মাণে স্বেচ্ছাসেবী হয়ে যুক্ত থাকা বাংলাদেশি কমিউনিটির কয়েকজন। এদিকে, রুচিহীন কারুকার্য উল্লেখ করে অস্ট্রেলিয়ান সরকারের স্থানীয় কাউন্সিলকেও দোষ দিচ্ছেন কেউ কেউ।
বিজ্ঞাপন
স্তম্ভকে ঘিরে বাংলাদেশি কমিউনিটি এখন দুভাগে বিভক্ত। স্তম্ভটিতে পতাকা থাকায় কমিউনিটির অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। তবে অনেকেই বলছেন এটি একেবারেই মানসম্মত হয়নি।
মঙ্গলবার (২ মার্চ) বাসভূমি নামের একটি গণমাধ্যম, 'বিকৃত স্মৃতিসৌধ চাই না' শিরোনামে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে অংশ নেন সিডনির আওয়ামী লীগ-বিনপিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা ও সাংবাদিক কর্মীরা।
বিজ্ঞাপন
আলোচনায় অংশ নিয়ে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নকশা বিকৃতিকারীদের বয়কট করার দাবী জানান কেউ কেউ। এতে ঘোষণা আসে কার্যকরী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা চালিয়ে যাওয়ার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কমিউনিটি সদস্য বলেন, অনেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দাওয়াত না পেয়ে আরও বেশি ক্ষুব্ধ হয়ে থাকতে পারেন। আবার প্রতিহিংসা থেকেও অনেকে এসব করতে পারেন।
প্রতিবাদকারীদের একজন বলেন, এমন বিকৃত নকশা হবে তা কখনোই আমাদের বলা হয়নি। এত টাকা নিয়ে একটা হাস্যকর কাজ মোটেও কাম্য নয়। আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য কখনো বিকৃত হতে দেবো না।
স্তম্ভ নির্মাণের নেপথ্যে কাজ করা দলের সদস্য মোহাম্মদ জামান টিটু বলেন, আমি দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলার চেষ্টা করছি। প্রতিবাদকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তাদের বৈঠকে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছি। আমাদের কমিউনিটি সবার আগে। সবার স্বার্থে আমরা সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাব।
আগামী ৬ মার্চ সিডনির বাংলাদেশি অধ্যুষিত লাকেম্বায় পক্ষ-বিপক্ষ দুদলেরই কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। তবে দুপক্ষের সমঝোতা হলে এ কর্মসূচি উঠিয়ে নেওয়া হতে পারে।
সিডনির অ্যাসফিল্ডে প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয় ২০০৬ সালে। এবার দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতিস্তম্ভ ক্যান্টাবারি ও ব্যাংকসটাউন সিটি কাউন্সিলের অধীনে নির্মাণ করা হয়, যেটি লাকেম্বা সংলগ্ন বেলমোর পিল পার্কে অধিষ্ঠিত। এটি নির্মাণে ৪৫ হাজার ডলারেরও বেশি অর্থ ব্যয় হয়েছে বলে দাবি করছে কর্তৃপক্ষ।
আরএইচ