মালয়েশিয়ায় যথাযোগ্য মর্যাদা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস। দিবসটি উপলক্ষে রোববার (৭ মার্চ) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাষ্ট্রদূত মো. গোলাম সারোয়ার।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে মালয়েশিয়া সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধের কারণে অনুষ্ঠানে শুধুমাত্র দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন। তবে দূতাবাসের ফেসবুক পেজে সরাসরি সম্প্রচার করে প্রবাসীদের অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়।

আলোচনা সভার শুরুতে কোরআন তিলাওয়াতের পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বড় পর্দায় ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে দেখানো হয়। এরপর ৭ মার্চ উপলক্ষে দেওয়া রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনানো হয়। রাষ্ট্রপতির বাণী পড়ে শোনান ডেপুটি হাইকমিশনার মো. খোরশেদ আলম খাস্তগীর ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনান শ্রম কাউন্সিলর মো. জহিরুল ইসলাম।

দূতাবাসের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) ও দূতালয় প্রধান রুহুল আমিনের উপস্থাপনায় আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত মো. গোলাম সারোয়ার বলেন, ৭ মার্চ বাঙালি-জাতির মুক্তির সংগ্রাম ও স্বাধীনতার ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এ দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বজ্রকণ্ঠে যে কালজয়ী ভাষণ দিয়েছিলেন, তার মধ্যেই নিহিত ছিল বাঙালির মুক্তি।

তিনি আরও বলেন, সরকার এ দিনটিকে ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে, যা একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যার অনন্য সাধারণ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালে অর্জন করে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।

রাষ্ট্রদূত বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণটি ‘মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড’ তালিকায় স্বীকৃতি দিয়ে ইউনেস্কো নিজেই গর্বিত হয়েছে। বাঙালি হিসেবে এটি আমাদের বড় অর্জন। এ ভাষণের কারণে বিশ্বখ্যাত নিউজউইক ম্যাগাজিন ১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল সংখ্যায় বঙ্গবন্ধুকে ‘পয়েট অব পলিটিকস’ হিসেবে অভিহিত করে। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ কেবল আমাদের নয়, বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতাকামী মানুষের জন্য প্রেরণার চিরন্তন উৎস হয়ে থাকবে।

তিনি বলেন, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলায়’ পরিণত করাই ছিল বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্ন। মহান এ নেতার সেই স্বপ্নপূরণে আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এজন্য ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘রূপকল্প-২০২১’ ও ‘রূপকল্প-২০৪১’ ঘোষণা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সন্ধিক্ষণে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে দলমত-নির্বিশেষে সবাইকে নিজ-নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত।

আলোচনা সভায় দূতাবাসের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা কমোডর মোস্তাক আহমেদ, শ্রম শাখার কাউন্সিলর (২) মো. হেদায়েতুল ইসলাম মন্ডল, কাউন্সিলর মাসুদ হোসাইন, পাসপোর্ট ও ভিসা শাখার কাউন্সিলর মো. মশিউর রহমান তালুকদার, বাণিজ্য শাখার কাউন্সিলর মো. রাজিবুল আহসান, দূতাবাসের কাউন্সিলর তাহমিনা ইয়াছমিন, শ্রম শাখার প্রথম সচিব মো. ফরিদ আহমদসহ দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এসএসএইচ