নাট্যচক্রের সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব
"ধাত্রী নব নাট্যধারার অঙ্গীকার নিত্য সৃজনের" স্লোগান কে হৃদয়ে ধারণ করে ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় "নাট্যচক্র"। ইতোমধ্যেই ৫০ বছর পূর্ণ করেছে নাট্য সংগঠনটি। এই দীর্ঘ সময়ে যারা মেধা শ্রম ও সময় দিয়ে নাট্যচক্র কে সমৃদ্ধ করেছেন তাদের সবাইকে নিয়ে শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করেছে "নাট্যচক্র"। এ উপলক্ষ্যে বছর ব্যাপী অনুষ্ঠান মালার অংশ হিসেবে আলোচনা সভা ও সংগঠনটির মঞ্চায়িত প্রথম নাটকের পুনঃমঞ্চায়ন হয়।
দুই পর্বে বিভক্ত অনুষ্ঠানটির প্রথম পর্বে ছিল আলোচনা অনুষ্ঠান। দ্বিতীয় পর্বে ছিল নাট্য চক্রের প্রথম পযোজনা "এক্সপ্লোসিভ ও মূল সমস্যা" নাটকের পুন:মঞ্চায়ন।
বিজ্ঞাপন
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের ডাক তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। বিশেষ অতিথি ছিলেন মঞ্চসারথী আতাউর রহমান , নাট্যজন মামুনুর রশিদ এবং নাট্যজন নাসির উদ্দিন ইউসুফ । সভাপতিত্ব করেন "নাট্যচক্র" এর সভাপতি ম.হামিদ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নাট্যচক্র" এর সহ-সভাপতি বিশিষ্ট নাট্যজন ফাল্গুনী হামিদ, সহ-সভাপতি দেবপ্রসাদ দেবনাথ, সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান টুলু, নাট্যজন খায়রুল আলম সবুজ, নাট্যজন খ.ম হারুন, নাট্যজন নরেশ ভূঁইয়া সহ বিভিন্ন নাট্যদলের নাট্যজন এবং সুধীজনেরা।
বিজ্ঞাপন
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এক গৌরব উজ্জ্বল ইতিহাস। এই ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে রয়েছে সাংস্কৃতিক কর্মীদের অবদান। মুক্তিযুদ্ধের পরপরই যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে নাটকের চর্চা অব্যাহত রাখতে নাট্যচক্র'এর যে অবদান, তা জাতি চিরদিন স্মরণে রাখবে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বাংলাদেশ সরকারের ডাক তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, ‘শুধু নাটক নয়, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে নাট্যচক্রের বলিষ্ঠ ভূমিকা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। সংগঠনটির উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।’
সংগঠনটির সভাপতি, প্রাক্তন মহাপরিচালক বিটিভি ও এফডিসি এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যান বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন ও নাট্যজন ম. হামিদ বর্তমান ও অতীতের সব সদস্য ও শুভানুধ্যায়ীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘অতীতের মতো আগামীর পথচলায় সহযাত্রীরা সবাই সঙ্গে থাকবেন এটাই প্রত্যাশা। নাটকের জয় হোক।’ এছাড়া তিনি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই শুভদিনে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা প্রতিটি মানুষের মঙ্গল কামনা করেন।
দ্বিতীয় পর্বে হয় নাট্যচক্রের প্রথম পযোজনা "এক্সপ্লোসিভ ও মূল সমস্যা" নাটকের পুন:মঞ্চায়ন। এতে অভিনয় করেন রবিউল মাহমুদ ইয়ং , সামসুদ্দিন হায়দার ডালিম, জুনায়েদ ইউসুফ, তনিমা হামিদ, মাসুদুল হাসান শাওন
রোমেল মাহমুদ, পরিমল কুমার পাল এবং মোঃ শফিউল আজম। নাটকটির রচনা করেন সেলিম আল দীন এবং নির্দেশনায় ছিলেন ম. হামিদ।
নাটকটির উল্লেখযোগ্য দিক হলো, এটি সেলিম আল দীন-এর প্রথম লেখা, নির্দেশক ম.হামিদের প্রথম নির্দেশনা এবং নাসির উদ্দিন ইউসুফ এর প্রথম অভিনীত নাটক।
মঞ্চ ও আলোক পরিকল্পনায় জুনায়েদ ইউসুফ, আবহ ও শব্দ পরিকল্পনায় শিশির রহমান এবং সহযোগিতায় সোমাঘোষ সহ অন্যরা ছিলেন।
উল্লেখ্য স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১০ আগস্ট একদল তরুণ, নবীন, উদ্যম ও প্রতিভাবানদের নিয়ে নাট্যচক্র প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর নাট্যচক্রই বাংলাদেশের অন্যতম প্রথম নাট্যদল; যা এদেশের নাট্য কর্মীদের নাট্যচর্চায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে। সংগঠনটি জন্মলগ্ন থেকে আজ অবধি বাংলাদেশের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
এমটিআই