সুদের হার বৃদ্ধি, আকাশচুম্বী মুদ্রাস্ফীতি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, নাগরিকদের শূন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্ট— সব মিলিয়ে কঠিন অবস্থায় কানাডার অর্থনীতি। কানাডা প্রবাসী লাখেরও বেশি বাংলাদেশি এর বাইরে নয়। খোদ কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সতর্ক করে বলেছেন, কানাডীয়দের জন্য ২০২৩ সাল হবে খুব কঠিন।

২০০৮ সালের পর ব্যাংক ঋণে সুদের হার বাড়িয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছে ব্যাংক অব কানাডা। আয় বাড়েনি, তবে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে। সুদের হার ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রবাসীদের মধ্যেও বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। নিম্নবিত্তদের জন্য চালু করা ফুড ব্যাংকে দীর্ঘ হচ্ছে লাইন।

সম্প্রতি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ২০২৩ সাল হবে কানাডীয়দের জন্য কঠিন সময়। একসঙ্গে এর মোকাবিলা করতে হবে। প্রত্যক্ষ সরকারি সহায়তা নিয়ে তিনি জনগণের পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ সতর্ক করে বলেছে, জি-সেভেনের দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি ভালো হলেও কানাডা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

আর্থিক মন্দা থেকে নাগরিকদের সুরক্ষায় নানা পদক্ষেপ নিয়েছে ট্রুডো সরকার। এর মধ্যে রয়েছে সাপ্লাই চেইন শক্তিশালী করা, সহজলভ্য চাইল্ড কেয়ার, জিএসটি রিবেট, রেন্টাল সাপোর্ট ও নিম্নআয়ের মানুষের জন্য ডেন্টাল কেয়ার সহায়তা।

কানাডার ‘নতুন দেশ’ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর বলেন, সব ধরনের জিনিসপত্রের দামই বাজারে বাড়ছে, সরকার নিয়ন্ত্রণের নানা রকম চেষ্টা করছে, কিন্তু সেটি যে খুব বেশি কাজ করছে তা মনে হচ্ছে না। ইনফ্লেশন নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যাংক সুদের হার বাড়াতে বাড়াতে সাম্প্রতিক সময়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে। ফলে নাগরিকদের ওপর একটি বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। ফলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ইনফ্লেশন এবং সে অনুপাতে আয় না বাড়ার কারণে ২০২৩ সাল নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। মানুষ ভাবতে শুরু করেছে সামনে কি হবে।

কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব এবং রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী আবদুল্লা রফিক বলেন, কানাডা সরকারের নতুন নিয়ম অনুযায়ী ২০২৩ সালে কানাডীয়ানদের বাড়ি কেনার সুবিধার্থে বিদেশি ক্রেতারা আগামী দুই বছর কানাডায় কোনো বাড়ি কিনতে পারবে না। এ কারণে আমাদের মতো রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীদের ২০২৩ সাল অনেক কঠিন যাবে।

উৎসব সুইটস অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী গোলাম খাইরুল বাশার মারুফ বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে, সর্বোপরি ২০২৩ সাল হবে কানাডার জন্য একটি চ্যালেঞ্জের বছর।

/এসএসএইচ/