বঙ্গমাতা এবং শেখ কামাল-এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করছেন রাষ্ট্রদূত।

কাতারের দোহাতে যথাযথ মর্যাদায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব-এর ৯৩তম এবং জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল-এর ৭৪তম জন্মবার্ষিকী পালন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস। শনিবার (৫ আগস্ট) স্থানীয় সময় বঙ্গমাতা ও শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কাতারের রাজধানী দোহা আল হেলাল বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা, বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশীদের উপস্থিতিতে কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল-এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর বঙ্গমাতা, শেখ কামাল’সহ ১৫ আগস্টের সব শহীদ-বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার শান্তি এবং দেশের সার্বিক উন্নয়ন কামনা করে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। পরবর্তীতে এ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রেরিত বাণী পাঠ করে শুনানো হয়।

আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হচ্ছে বঙ্গমাতা এবং শেখ কামাল-এর ওপর নির্মিত দুইটি প্রামাণ্যচিত্র।

কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও দ্বিতীয় সচিব এবং দূতালয় প্রধান মোহাম্মদ নাছির উদ্দীনের পরিচালনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাতার সফরত জাতীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাসের সামরিক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, কাউন্সিলর ও ডেপুটি চিফ অব মিশন মো. ওয়ালিউর রহমান, কাউন্সিলর মোবাশ্বেরা কাদের, শ্রম কাউন্সিলর মোহাম্মদ মাশহুদুল কবির, কাউন্সিলর ভিসা ও পাসপোর্ট মাহাদি হাসান, শ্রম প্রথম সচিব তন্ময় ইসলাম, সচিব আব্দুল্লাহ আল রাজী প্রমুখ।

আলোচনা পর্বে রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম তার বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এবং তাদের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধ পরবর্তী দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর ত্যাগী সহযাত্রী হিসেবে বঙ্গমাতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছিলেন বঙ্গবন্ধুর সারা জীবনের অনুপ্রেরণার উৎস। একদিকে তিনি যেমন সংসারের হাল ধরেছেন অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুর কারাবাসের সময় সাহসকিতা ও রাজনৈতিক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন।

শহীদ ক্যাপ্টেন কামাল সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বহুমাত্রিক এবং সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী এ ব্যক্তিত্বের মাত্র ২৬ বছরের সংক্ষিপ্ত জীবন ছিল তার অসামান্য অর্জনে সমৃদ্ধ। বঙ্গবন্ধুর মতোই তিনি ছিলেন বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ে সোচ্চার আর নির্ভীক। ক্রীড়া ও সংস্কৃতিতে আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে তিনি আজীবন কাজ করে গেছেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার অভিযাত্রায় তার প্রদর্শিত পথ, আদর্শ এবং দিক-নির্দেশনা আজও এক অনুকরণীয় মডেল। শেখ কামালের জীবন ও আদর্শ সবসময় আমাদের কাছে, বিশেষ করে যুব সমাজের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এসময় সংসদ সদস্য এবং অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিরা তাদের বক্তব্যে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এবং শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল-এর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং দেশের জন্য তাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ ও অনুকরণীয় জীবনাদর্শের কথা তুলে ধরেন। এছাড়াও এ আলোচনা অনুষ্ঠানে তাদের ওপর নির্মিত দুইটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কাতারে বসবাসরত মুক্তিযোদ্ধা, কাতারস্থ বাংলাদেশি রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং নারী সংগঠনের নেতাকর্মীরাসহ বাংলাদেশ কমিউনিটির সম্মানিত সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এফকে