প্যারিসে নির্মিত প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনারের উদ্বোধন
সংগৃহীত ছবি
ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতির তীর্থভূমি ফ্রান্সের প্যারিসে নির্মিত হয়েছে প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার। রোববার (৮ অক্টোবর) প্যারিসের বিখ্যাত সেন ডেনিস ইউনিভার্সিটির বার্নার্ড মারি স্কয়ারে নির্মিত এ শহীদ মিনারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশিবিদেশি আমন্ত্রিত অতিথিদের উপস্থিতিতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। স্থানীয় মেয়র, গণমাধ্যম কর্মী, বাংলাদেশ কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
অল ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের (আয়েবা) মহাসচিব ও বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কাজী এনায়েত উল্লাহ তার বক্তব্যে ভাষা আন্দোলনে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরসহ অন্য ভাষা শহীদদের অবদানের ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগে অর্জিত এই মাতৃভাষা ও ইউনেসকো স্বীকৃত আন্তর্জাতিক একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ভাষা আন্দোলনের চেতনায় বাঙালি জাতীয়তাবাদ দর্শনের বিকাশ ও ব্যাপ্তি ঘটে, যা পর্যায়ক্রমে স্বাধিকার আন্দোলন এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতিসত্তার অভ্যুদয় ঘটায়। এ কারণে শহীদ দিবস ও শহীদ মিনার আমাদের আবেগের জায়গা। এখান থেকে আমরা বার বার প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে পাই। প্যারিসের মাটিতে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নকশা অনুযায়ী এ শহীদ মিনার নির্মাণে সহযোগিতার জন্য তিনি আর্কিটেক্ট ও মেয়রকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনারটি বাংলা ভাষাভাষী মানুষের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন কাজী এনায়েত উল্লাহ।
বিজ্ঞাপন
বাস্তবায়ন কমিটির অর্থ সমন্বয়ক টিএম রেজা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসীরা অস্থায়ী শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেও আগামী ২০২৪ সাল থেকে ভাষা আন্দোলনে আত্মদানকারী শহীদদের প্রতি স্থায়ী শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারবে।
এএসবির সভাপতি স্বরুপ সদিউল জানান, শহীদ মিনার তৈরি করতে প্রায় ৮০ হাজার ইউরো খরচ হয়েছে। তিনি বলেন, এই ব্যয়ের সিংহ ভাগ দিয়েছেন প্রধান সমন্বয়ক এবং অল ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন (আয়েবা) মহাসচিব কাজী এনায়েত উল্লাহ। এই উদ্যোগ বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাষা, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি মেলে ধরবে, বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে অনন্য উচ্চতায়।
প্যারিস প্রবাসী বাংলাদেশি, যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্যারিস সিটিতে এমন একটি স্থাপত্য নির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে তাদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
স্থানীয় মেয়র বাংলাদেশিদের এ উদ্যোগ ফ্রান্সের প্রতিটি শহরের জন্য অনুকরণীয় হয়ে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্যারিসে প্রথম শহীদ মিনার হলেও ফ্রান্সে দ্বিতীয় স্থায়ী শহীদ মিনার হবে এটি। ইতোপূর্বে ফ্রান্সের তুলুজ শহরে প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়েছে।
লেখা পাঠিয়েছেন : ফরিদ আহম্মদ রনি, ফ্রান্স থেকে
এসএসএইচ