বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট সদস্য থমাস জেডিহস্কি ও ‌‌‘স্টাডি সার্কেল লন্ডন‌’-এর যৌথ আয়োজনে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৭ নভেম্বর বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসের ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের একটি কক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারের প্রধান আয়োজক ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট সদস্য থমাস জেডিহস্কি এবং আয়োজক ‘স্টাডি সার্কেল লন্ডন’- এর যৌথ আয়োজনে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন- ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট সদস্য ও ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের কর্মসংস্থান ও সামাজিক বিষয় সংক্রান্ত বাজেট নিয়ন্ত্রণ কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান থমাস জেডিহস্কি, স্টাডি সার্কেল লন্ডন-এর চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ মোজাম্মেল আলী, বাংলাদেশের সাবেক মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান ও মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী ড. রায়হান রশিদ।

সেমিনারে বক্তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের ভূমিকা, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কসহ বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করেন। তারা বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০২০ সালে বাংলাদেশের মোট বাণিজ্যের ১৯.৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে।

বক্তারা বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রগতির চাবিকাঠি হিসেবে পোশাক শিল্পের অবদানের কথা ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করেন। তারা বলেন, বাংলাদেশের জিডিপি ২০০০ সালে ৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০২১ সালে ৪১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। মাত্র দুই বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় আটগুণ। 

থমাস জেডিহস্কি বলেন, বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ থেকে পূর্ণাঙ্গ শিল্পোন্নত দেশে রূপান্তরিত হচ্ছে। আজ বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য স্থিতিশীলতা ও দ্রুত উন্নয়ন দেশটিকে ‘দক্ষিণ এশিয়ার বাঘ’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, অবশ্যই বাংলাদেশের এ অভূতপূর্ব উন্নয়নের জন্য বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারকে ধন্যবাদ দিতে হবে।

তিনি গঠনমূলক সংলাপের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির প্রশংসা করেন। পাশাপাশি এমন অগ্রগতিকে স্বাগত জানাতে হবে বলেও উল্লেখ করেন।

থমাস জেডিহস্কি বাংলাদেশের সঙ্গে শক্তিশালী ও নির্ভরযোগ্য অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন। তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রের জয় হবে।’

বাংলাদেশের সঙ্গে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দৃঢ় সম্পর্ক এবং পারস্পরিক দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে যা একটি শক্তিশালী অংশীদারিত্বের ইঙ্গিত দেয়— বলেন ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের এ সদস্য।

সেমিনারে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, ইইউর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং গঠনমূলক সংলাপের প্রয়োজনীয়তার বিষয় তুলে ধরা হয়।

সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট সদস্য মেরগুলহো এসঅ্যান্ডডি-এর উপদেষ্টা সারাহ বুগেজা, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট সদস্য সারানজোবা রেনিউ-এর উপদেষ্টা ভেরোনিকা হোরুউডোভা, ইপি বাহ্যিক বিভাগের কর্মকর্তা লোটে পিটার্স, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট সদস্য স্টেফেনেক-এর সেক্রেটারি ডায়ানা চেজোভা, সাবেক ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট সদস্য পাওলো কাসাকা, ইন্টা সচিবালয়ের কর্মকর্তা পালোমা সার্ভিন, ফেলিক্স নির্বাচন পর্যবেক্ষণ বিভাগের উপদেষ্টা সারা মার্কেস, ইপি অর্থনৈতিক পলিসি বিভাগের কর্মকর্তা জর্ডান ডি বোনো, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট সদস্য গ্রুপ সচিবালয়ের কর্মকর্তা সাবরিনা নেজেম, ইপি মানবাধিকার বিভাগের অফিসার সিমোনা বিশকোস্কা, ইউরোপিয়ান রিপোর্টার ফোরামের রাজনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক নিক পাওয়েল, ইপি আউটরিচ বিভাগের কর্মকর্তা আলেক্সিয়া রুস্কা মারকোরিস, ব্রাসেলসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহাবুব হাসান সালেহ, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া বিভাগের অফিসার নাদিয়া সাবাত্তিনি, ইসিআর পলিসি’র উপদেষ্টা মিগুয়েল টোডেলানো, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিভাগের কর্মকর্তা ম্যাগি হুইন, ইপিপি সচিবালয়ের কর্মকর্তা মার্ক ভ্যান ক্রানেনবার্গ, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের অর্থ বিভাগের কর্মকর্তা জুজান্না হেবডজিনস্কা, ইপিপি প্রেস বিভাগের কর্মকর্তা জ্যান ওসুচ, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া বিভাগের প্রধান নিকোলো রিনালডি, উইলেম ভ্যান ডের গিস্ট, তাজিন মাহনাজ, বেলজিয়ান রাজনীতিবিদ ম্যাক্সিম ভ্যানডেকারকহোভ ও আনা আবদি, প্রকৌশলী হাসনাত মিয়া, শহিদুল ইসলাম শহীদ, আনসার আলী, গোলাম জিলানী, স্টাডি সার্কেল লন্ডনের সাধারণ সম্পাদক জামাল খান, সোহেল খান, ডা. সায়মা মোস্তফা, ঈসমাইল খান প্রমুখ।

এমএআর/