কানাডার ক্যালগরিতে আলবার্টা আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের যৌথ উদ্যোগে পালিত হয়েছে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ। দিবসটি উপলক্ষ্যে এদিন আলোচনা সভা ও বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের উপর ভিডিও চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ ও কানাডার জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ একাত্তরের সব শহীদ ও প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

অনুষ্ঠানে ইউনেস্কো কর্তৃক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের তাৎপর্য তুলে ধরা হয়। এছাড়াও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস, মহান ভাষা আন্দোলন, স্বাধিকার আন্দোলন, স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে পরাধীনতার গ্লানি থেকে জাতিকে মুক্ত করে এনে দিয়েছেন লাল-সবুজের পতাকাখচিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মানুষের প্রতি ছিল তার অকৃত্রিম ভালোবাসা।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও এ বি এম কলেজের প্রেসিডেন্ট ড. বাতেন, আলবার্টা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. কাদির, সাধারণ সম্পাদক এন্থনি জ্যাকব, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লা রফিক, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব মাহফুজুল হক মিনু, মাহবুবুল হক খোকন, কলামিস্ট উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মো. মাহমুদ হাসান, রাসেল রুপক, শুভ্র দাস শুভসহ অন্যান্যরা।

আলবার্টা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এন্থনি জ্যাকব বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি আদর্শ, চেতনা ও দর্শনের নাম। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। তিনি নিজেই একটি ইতিহাস। তার জন্ম না হলে হয়তো আজ বাংলাদেশের জন্ম হতো না। তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে কাজ করে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আগমন ঘটেছিল মধুমতি আর ঘাঘর নদীর তীরে অবস্থিত অবারিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি টুঙ্গিপাড়া গ্রামে। নিভৃত পল্লির ছায়া ঢাকা গাঁয়ে, কাশফুলের শুভ্রতার মোহমুগ্ধ বাঁকে, পাখির কলতানে মুখরিত নিকুঞ্জ আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেই শিশু। তার জন্ম না হলে আজকের বাংলাদেশ পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হতো না। তার ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ মূলত ছিল পুরো জাতিকেই  মুক্তিবাহিনী হয়ে উঠার আহ্বান।

বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ রফিক বলেন- বঙ্গবন্ধুর পরম দেশপ্রেম, দেশের মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা, বলিষ্ঠ শপথে শোষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হওয়ার ঐকান্তিক চেতনা ও প্রেরণা জাগিয়েছে। তাই তো নিজের জীবন বিপন্ন করে বাঙালি জাতির জন্য এনে দিয়েছেন মহান স্বাধীনতার ঐতিহাসিক সফলতা।

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সমাজসেবক ও এ বি এম কলেজের প্রেসিডেন্ট ড. আব্দুল বাতেন বলেন- খোকা (শেখ মুজিবুর রহমান) নামক এ শিশুটি ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে শেখ লুৎফর রহমান ও সায়েরা খাতুনের ঘর আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন। খোকার পুরো নাম শেখ মুজিবুর রহমান। অতঃপর টুঙ্গিপাড়ার শেখ মুজিবুর রহমান দেশের গণ্ডি পেরিয়ে হয়ে উঠেন বিশ্ব ইতিহাসের কিংবদন্তি মহানায়ক ও মহাপুরুষ।

তিনি বলেন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু বাঙালির বঙ্গবন্ধু নয়, তিনি বিশ্ববরেণ্য রাজনীতিক ‘বিশ্ববন্ধু’ উপাধিতেও বিশ্বনন্দিত। বঙ্গবন্ধুর শ্রেষ্ঠত্ব হল তিনি শুধু বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের একজন স্বপ্নদ্রষ্টাই ছিলেন না, তিনি বাঙালি জাতিকে অনন্য অসাধারণ ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ করে হাজার বছরের বাঙালি জাতির স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদান করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানের এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দিয়ে জনগণকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আবির খন্দকার, ফাহিম করিম জয়, আব্দুস সালাম এবং রোজিনা মিনাসহ আরো অনেকে।

পিএইচ