পর্তুগালের লিসবনে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে গণহত্যা দিবস পালন করা হয়েছে। নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংস ও কাপুরুষোচিত হামলার কথা স্মরণ করে গণহত্যায় নিহতদের স্মরণে সোমবার (২৫ মার্চ) দূতাবাস প্রাঙ্গণে একটি সেমিনার, একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও মোমবাতি প্রজ্বলনের আয়োজন করা হয়।

পর্তুগিজ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, গবেষক, বুদ্ধিজীবী এবং জাতিসংঘের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির ব্যক্তিরা ও দূতাবাসের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ‘বাংলাদেশ অ্যাট ৫৩ : লুকিং ব্যাক ইন দ্য ফ্রিডম স্ট্রাগল অ্যান্ড জেনোসাইড’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে সেমিনার শুরু হয়।

রাষ্ট্রদূত রেজিনা আহমেদ তার উদ্বোধনী বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদ ও বীরাঙ্গনাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে সংঘটিত গণহত্যার বর্ণনা দেন, যা মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস ধরে চলেছে। তিনি পর্তুগালের সুশীল সমাজের সদস্যদের এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সদস্যদের ১৯৭১ সালের গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতির প্রচারণাকে সমর্থন করার আহ্বান জানান।

প্যানেল আলোচনায় ইউনিভার্সিটি লুসফোনার প্রকৌশল অনুষদের অধ্যাপক ড. মানস সূত্রধর মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তিনি বাংলাদেশের গণহত্যার অমানবিকীকরণ, উচ্ছেদ ও অস্বীকারের দিকগুলো বিশদভাবে বর্ণনা করেন এবং মন্তব্য করেন যে ১৯৭১ সালে তারা যা করেছিল তার জন্য পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে, বিশেষ করে জাতিসংঘকে অবিলম্বে বাংলাদেশের গণহত্যাকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান।

প্রাক্তন সংসদ সদস্য ও সিটি কাউন্সিলর পেড্রো আনাস্তাসিও তার বক্তৃতায় এই দিনে ক্ষতিগ্রস্ত এবং বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি একটি স্প্যানিশ উক্তি উদ্ধৃত করে বলেন যে ‘যাদের স্মরণ করা হয় তারা চিরকাল বেঁচে থাকে।’

সেমিনারে ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের গণহত্যার ঘটনা সম্বলিত একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি, আন্তর্জাতিক মিডিয়ার ধারণকৃত গণহত্যার ফুটেজ ও বাংলাদেশের গণহত্যার স্বীকৃতির মামলা প্রদর্শন করা হয়।

আলোচনা পর্ব শেষে অতিথিরা চ্যান্সারি প্রাঙ্গণে একটি মোমবাতি প্রজ্বলনের মিছিলে যোগ দেন এবং ১৯৭১ গণহত্যা শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর অংশ হিসেবে প্রদর্শিত বাংলাদেশের গণহত্যার শিকারদের প্রতিকৃতির সামনে মোমবাতি প্রজ্বলন করেন।

এসএসএইচ