পবিত্র কোরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ পাক এরশাদ করেছেন, ‘হে হাবিব, আমি আপনাকে বিশ্বজগতের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছি’ (আল আম্বিয়া: ১০৭)। প্রিয় নবিজির (দ.) আগমনে পৃথিবী একদিকে যেমন পবিত্র হয়েছে অন্যদিকে হয়েছে তৌহিদের প্রতিষ্ঠা। নবিজি (দ.) সকল প্রকার অন্যায়, অনাচার, ভেদাভেদ, বৈষম্য দূর করেছেন। সাদা-কালো, উঁচু-নিচু, ধনী-গরিব সকল প্রকার বৈষম্যকে দূরীভূত করে প্রতিষ্ঠা করেছেন সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির অনন্য বন্ধন।

আইয়্যামে জাহেলিয়াতের অন্ধকার যুগে এসে প্রিয় রাসুল (দ.) এমন সংস্কার করেছেন যা অনন্তকাল ধরে স্মরণীয়, বরণীয়, অনুসরণীয়, অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। প্রিয় রাসুল (দ.) যে আদর্শ দিয়ে সংস্কার করেছেন সেই নিয়ামত তথা নূরে বাতেন উনি রেখে গিয়েছেন উম্মতের কল্যাণে। কালের ধারাবাহিকতায় সেই নিয়ামত এসে পৌঁছেছে কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের খলিলুল্লাহ, আওলাদে মোস্তফা, খলিফায়ে রাসুল (দ.) হযরত শায়খ সৈয়্যদ গাউছুল আজম (রা.) এর সিনা মোবারকে। সেই বাতেনী নূর তাওয়াজ্জুহ তথা অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে নফসানিয়ত বা পশুত্বকে দূর করে ইনসানিয়ত তথা মনুষ্যত্বকে প্রতিষ্ঠা করেছেন।

শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) বাদে জুমা থেকে চট্টগ্রাম কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফে ৭২তম পবিত্র জশনে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত মাহফিলে মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী প্রধান মেহমানের বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, একজন সাধারণ মানুষ এই মহান তরিক্বতে অন্তর্ভুক্ত হলে প্রতিদিন এগারোশ এগারোবার মুহব্বতের নিয়তে দরুদ শরিফ আদায় করতে হয়। কখনো কাজা হয়ে গেলে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে আদায় করে দিতে হয়। এই দরবারের একজন অনুসারী তরিক্বতে অন্তর্ভুক্ত হলে জীবনে শুধু বারোই রবিউল আউয়াল একদিন নয়, বরং ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) এর আদর্শকে প্রতিদিন ব্যবহারিকভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে জীবন অতিবাহিত করে। নূরে বাতেন কলবে নিলে প্রিয় রাসুল (দ.) এর মুহব্বত অন্তরে আসে। যার ফলে ফরজ ইবাদতের পাশাপাশি সুন্নাতের প্রতি মুহব্বত সৃষ্টি হয়। এভাবে সাধারণ একজন ব্যক্তি পরিণত হয় খালেস আশেকে রাসুলে। হযরত গাউছুল আজম (রা.) সমস্ত জীবন মানুষকে নূরে বাতেন দিয়ে আত্মশুদ্ধির অলংকারে সাজিয়েছেন। উনার এই কাজ প্রিয় নবিজির (দ.) কাছে এতটাই পছন্দ হয়েছে যে উনাকে রওজা পাকে ডেকে নিয়ে অলৌকিকভাবে বায়াত প্রদান করে খলিফায়ে রাসুল (দ.) এর মর্যাদা দান করেছেন, সুবহানআল্লাহ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য এবং মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশের মহাসচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবুল মনছুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাহফিলে বক্তব্য দেন মুফতি মাওলানা কাজী মুহাম্মদ আনোয়ারুল আলম সিদ্দিকী, প্রফেসর ড. জালাল আহমদ ও মাওলানা মুহাম্মদ গোলাম রব্বানী ফয়সাল।

মিলাদ-কিয়াম শেষে প্রধান মেহমান দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি-সমৃদ্ধি এবং কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা হযরত শায়খ সৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদিয়াল্লাহু আনহুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন।

এসএসএইচ