যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন শহর হলো ডেট্রয়েট। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বার্কলে-এর আদারিং অ্যান্ড বেলংয়িং ইনস্টিটিউট থেকে  সম্প্রতি প্রকাশিত সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে বলে এবিসি নিউজ ডেট্রয়েট খবরে জানিয়েছে। 

সর্বাধিক বিচ্ছিন্ন শহরের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ফ্লোরিডার হিয়ালেহ সিটি, তৃতীয় অবস্থানে নিউজার্সির নেয়ার্ক, এরপরে যথাক্রমে  শিকাগো ও মিলওয়াকি।

‘কাঠামোগত বর্ণবাদের মূল উৎস’ শিরোনামে এই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ২০৯ মেট্রো অঞ্চলের মধ্যে ১৬৯টিতে ১৯৯০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বিচ্ছিন্নকরণের মাত্রা বেড়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই লাখের বেশি জনসংখ্যার ডেট্রয়েট হচ্ছে সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন শহর। বিচ্যুতিসূচক হচ্ছে ৮৪ শতাংশ।

ইনস্টিটিউটের তথ্যানুসারে, এই সূচকে দুটি এলাকার মধ্যে বিচ্যুতির মাত্রা নির্ধারণে ছোট এবং বৃহত্তর ভৌগোলিক ক্ষেত্রে বর্ণগত গোষ্ঠীগুলোর (বা অন্য কোনো গোষ্ঠীর) তুলনা করা হয়েছে। 

প্রতিবেদনে আয়ের ও দারিদ্র্যের মাত্রা, বাড়ির মূল্য, আয়ু এবং ভাড়ার মূল্যের উচ্চ বিভাজন, জনগোষ্ঠী, অতিমাত্রায় বিভক্ত শ্বেতাঙ্গ অঞ্চল এবং সংহত অঞ্চলগুলোর মধ্যে পার্থক্যের তুলনা করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিচ্ছিন্ন শ্বেতাঙ্গ অঞ্চলগুলো সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। যখন বিচ্ছিন্ন কৃষ্ণাঙ্গ ও বাদামি সম্প্রদায়গুলো সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে। 

প্রকল্পের শীর্ষস্থানীয় লেখক স্টিফেন মেনেনডিয়ান বলেছেন, আমেরিকানরা প্রথাগত জাতিগত বৈষম্যের বাস্তবতা সম্পর্কে অনেক বেশি সচেতনতা রয়েছে। তবে খুব কম লোকই বুঝতে পারে যে জাতিগত আবাসিক বিভাজন এই বৈষম্যের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত। 

সমীক্ষা অনুসারে, কৃষ্ণাঙ্গ বা হিস্পানিক লোকেরা যারা পৃথক পৃথক শ্বেতাঙ্গ পাড়া-মহল্লায় বেড়ে উঠেছে তাদের আয় অন্যান্য বর্ণের সম্প্রদায়ের তুলনায় বেশি। একটি ইন্টারেক্টিভ মানচিত্রে দেখা যায় যে, মেট্রো ডেট্রয়েট অঞ্চল, অ্যান আর্বর, ফ্লিন্ট, সাগিনাও, গ্র্যান্ড র‍্যাপিডস এবং আরও অনেকগুলো অঞ্চলে একটি উচ্চ বিভাজন স্তর রয়েছে। রাজ্যের কোনো কাউন্টি বা অঞ্চল বর্ণগতভাবে বিচ্যুত নয়।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, ডেট্রয়েটের কৃষ্ণাঙ্গ জনসংখ্যা এখন প্রায় ৭৮ শতাংশ, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো শহরের চেয়ে সর্বাধিক। ডেট্রয়েটসহ মেট্রো অঞ্চলগুলোতে মাত্র ২৩ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ এবং ৬৮ শতাংশ শ্বেতাঙ্গ। অথচ ডেট্রয়েট সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন শহর হিসেবে স্থান পেয়েছে। অনেক উত্তরের শহরগুলোর মতো কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠী ডেট্রয়েটে বাড়ে ১৯১৬-১৯৭০ সালের মধ্যে। কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানরা চাকরির সন্ধানে দক্ষিণাঞ্চল থেকে পালায়। ১৯২০ সালে ডেট্রয়েট চতুর্থ বৃহত্তম শহর হয়ে ওঠে। যদিও শহরের জনসংখ্যা ৯০ শতাংশেরও বেশি শ্বেতাঙ্গ থেকে গেছে, ডেট্রয়েটে কৃষ্ণাঙ্গ জনসংখ্যা ১৯১০ এবং ১৯২০ এর মধ্যে ৬১১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। 

প্রকল্পের সহলেখক এবং প্রতিষ্ঠানের ইক্যুইটি মেট্রিক্স প্রোগ্রামের প্রধান সমীর গম্ভীর বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যুক্তরাষ্ট্রের জাতিগত আবাসিক বিভাজনের প্রকৃতি এবং ব্যাপ্তি বোঝার জন্য এটি একটি অত্যন্ত পরিশীলিত ও শক্তিশালী সমীক্ষা। 

এইচকে