যুক্তরাজ্যের ক্যান্টের বেক্সিলির মহারাজা রেস্টুরেন্টে ফ্রেন্ডস অব ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের চ্যারিটি ডিনার ও আলোচনা সভা গত সোমবার (২৮ জুন) অনুষ্ঠিত হয়। সিলেট ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের সপ্তম তলা নির্মাণে প্রায় ১৩৫ হাজার পাউন্ডের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রবাসীরা।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন চ্যানেল এস এর চেয়ারম্যান আহমেদ উস সামাদ জেপি। সভা পরিচালনা করেন চ্যানেল এস এর হেড অফ প্রোগ্রাম ফারহান মাসুদ খান।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল সিলেটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছিল ২০১৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন সিলেটের চিফ প্যাট্রন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হসপিটাল উদ্বোধন করেন। সেই থেকে এ হাসপাতালটি সিলেট তথা প্রত্যন্ত অঞ্চলের হার্টের রোগীদের সুষ্ঠু সেবা দিয়ে আসছে।

সিলেটসহ দেশে দিন দিন হার্টের রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোগীদের চাপ বেশি থাকায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল সিলেটের সাততলা ভবন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ব্রিট ফাউন্ডেশন ইউকের বিশেষ সহায়তায় আয়োজিত এই ফান্ডরেইজিং ডিনার পার্টির শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন ইউকের পার্মানেন্ট ডোনার মেম্বার শেখ ফারুক আহমদ। কোরআন তেলাওয়াতের পর ইউকে কমিটির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট হাফিজ মজির উদ্দিন, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ইয়াকুব ও ইউকে এডভাইজারি কমিটির প্রেসিডেন্ট এম এ আহাদসহ মরহুমদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন সিলেটের এক্সিকিউটিভ মেম্বার ও ইউকে সেক্রেটারি, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মিছবাহ জামাল স্বাগত বক্তব্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন সিলেট প্রতিষ্ঠায় প্রবাসীদের অবদানের কথা তুলে ধরেন। 

তিনি বলেন, ২০০৬ সালে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ও বর্তমান চেয়ারম্যান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার ডা. এ মালিকের নেতৃত্বে সিলেট হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ডা. এম এ রকিব, মিসেস রকিব, মিসেস এ মালিক, সেক্রেটারি প্রফেসর আমিনুর রহমান লস্কর ও পাবলিসিটি সেক্রেটারি আবু তালেব মুরাদ লন্ডন সফরে আসেন। লন্ডনের ঐতিহাসিক বাংলাদেশ সেন্টারে প্রায় ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা ফান্ড রেইজ করে ইউকে প্রবাসীদের উপস্থিতিতে মরহুম হাফিজ মজির উদ্দিনকে প্রেসিডেন্ট, মিছবাহ জামালকে সেক্রেটারি ও এস আই আজাদ আলীকে নিয়ে ইউকে এডভাইজারি কমিটি গঠন করেছিলেন। সেই সময় প্রায় ১ কোটি টাকা মরহুম এম ইয়াকুব প্রদত্ত ও অন্যান্য ডোনারদের প্রদত্ত ৭০ লাখ টাকা পাঠানো হয়।

২০০৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহমেদ হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সেই থেকে ইউকে প্রবাসীরা ফাউন্ডেশনে সহযোগিতা করে আসছেন।

নতুন পুরাতন স্থায়ী দাতা সদস্যরা টেবিলে টেবিলে ঘুরে সবার অভিমত নেন ও আহমদ উস সামাদ চৌধুরীর অনুরোধে একে একে সবাই হাসপাতালের জন্য আর্থিক সাহায্যে দিতে এগিয়ে আসেন।

আর্থিক সাহায্যে দাতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সিমার্কের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি ইকবাল আহমেদ ওবিই ১০ লাখ টাকা, চানেল এস প্রতিষ্ঠাতা মাহি ফেরদৌস জলিল ৫০০০ পাউন্ড, বিশিষ্ট বাবসায়ীদের মধ্যে আবু লেইছ ৫০০০ পাউন্ড, এ গনি পরিবার ৫০০০ পাউন্ড, ইউকে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মুহিবুর রহমান মুহিব ৫০০০ পাউন্ড সংগ্রহ করবেন।

তারপর উপস্থিত প্রত্যেকে এক-দুই হাজার পাউন্ড করে সহায়তা করে সপ্তম তলা নির্মাণে সহায়তার জন্যে এগিয়ে আসেন। মহামারি করোনা সত্ত্বেও অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে আগত অতিথিরা এ উদ্যোগকে সফল করতে সচেষ্ট হন।

উল্লেখ্য, আহমদ উস সামাদ চৌধুরীর হাতে যারা অনুদান দিয়েছেন তাদের নাম উল্লেখ করেন তিনি। সর্বপ্রথম তিনি নিজে ও তার সহধর্মিনী মিসেস চৌধুরী ও আহমেদ উস সামাদ চৌধুরীর বড় ভাই সিলেট-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, কাজি এ এইচ নোমান, কবির আহমদ খলকু, এসবি ফারুক, ফরহাদ হোসেন টিপু, এম আলাউদ্দিন, হিসাবরক্ষক সাইদুল খালেদ, মোহাম্মদ রুবেল, মোহাম্মদ আশিক মিয়া, মুস্তাকিম রেজা চৌধুরী, মোহাম্মদ জুবায়ের, আব্দুল হাই, সোহেল চৌধুরী, মানিক মিয়া, মিসেস সুরিয়া মিয়া, মোহাম্মদ ইছবাহ উদ্দিন, জহিরুল হক, ডা. আলাউদ্দিন আহমেদ, মুহিব উদ্দিন চৌধুরী, পলি রহমান, ফজলুল হক ও রফিকুল হায়দার ইতোমধ্যে এক হাজার পাউন্ড করে অনুদান দিয়েছেন। তারা খুব শিগগির আরও অনুদান দেবেন বলে জানিয়েছেন।

যারা এক হাজার/দুই হাজার পাউন্ড দেবেন তাদের মধ্যে কুশিয়ারা গ্রুপের এমডি হারুন মিয়া, ব্যারিস্টার মাসুদ চৌধুরী, প্যারিসের বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা হেনু মিয়া, সিদ্দিকুর রহমান জয়নাল, জামাল উদ্দিন মকদ্দস, ইব্রাহিম আলী খন্দকার, এম এ মতিন, মরহুম এম এ আহাদ ফ্যামেলি, ফ্রেন্ডস অফ রুহী আহাদ, মোহাম্মদ শাহীন উজ্জল, রাসুল ইউসুফ প্রমুখ ব্যক্তিদের নাম পড়ে শোনান।

এছাড়াও এফএনএইচএফের চেয়ারম্যান জনাব মাহমুদুর রশীদ, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট মহিব চৌধুরী, মাহমুদুর রশীদ, মহিব চৌধুরী প্রত্যেকে এক হাজার পাউন্ড দেবেন। এছাড়াও এম এ কাইয়ুম (দুই লাখ টাকা) ট্রেজারার আবদাল মিয়া, বজলুর রশীদ এমবিই, মনসুর আহমেদ খান, অহিদ উদ্দিন মাদার অফ শেখ ফারুক আহমেদ, ফারহান মাসুদ খান, এনায়েত খান, নাহমাদ মিছবাহ, রুহুল শামসুদ্দিন, শারফুল শামসুদ্দিন প্রমুখ অনুদানের প্রতিশ্রুতি দেন।

অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ মতামত পেশ করে বক্তব্য রাখেন, হক কনসালটেন্সির ফজলুল হক, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ডা. আলাউদ্দিন আহমদ, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন ইউকের প্রেসিডেন্ট মুহিবুর রহমান মুহিব, উপদেষ্টা বোর্ডের প্রেসিডেন্ট এম শামস উদ্দিন, বজলুর রশীদ এমবিই, এফএনএইচএফের প্রেস সচিব আব্দুল মুনিম জাহেদী ক্যারল, এম এ কাইয়ুম, জয়েন্ট সেক্রেটারি মনসুর আহমদ খান, ট্রেজারার আবদাল মিয়া, গোলাম রব্বানী রুহি আহাদ, জিএসসি সাউথ ইস্ট রিজিওনের চেয়ারপার্সন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইছবাহ উদ্দিন, চ্যানেল এস এর চিফ রিপোর্টার মোহাম্মদ জুবায়ের, ডা. মোশাররফ হোসেন, বিসিএ প্রেসিডেন্ট এম এ মুনিম, লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বেলাল আহমদ, প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি সাংবাদিক নজরুল ইসলাম বাসন, এম এ গণী, সিদ্দিকুর রহমান জয়নাল, ফজলুর রহমান আকিক, আবুল লেইছ, ডা. হালিমা বেগম আলম, আলমগীর কবীর চৌধুরী, মারুফ চৌধুরী পলি রহমান, দর্পন সম্পাদক রহমত আলী, ব্যবসায়ী ইসলাম উদ্দিন, কাজি নোমান, কাউন্সিলর হানিফ আব্দুল মুকিত, মোহাম্মদ এনাম, ই হক, নাদির মজুমদার, অমি হোসেন, পলি রহমান, নাহিদা মিছবাহ, আয়শা খানম, রজিমুন্নেছা রুমা, ডা. ফারহানা মালিক পলি, ড. চন্দন আলম, মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, শেখ ফারুক আহমদ, আব্দুল নুর, সাব্বির হোসেন, অ্যাকাউটেন্ট রফিকুল হায়দার, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আলি সাদেক শিপু, সুফি সুহেল আহমেদ, শাহীন আহমেদ উজ্জল, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, মোহাম্মদ আব্দুল হাই, ডাব্লিউ আর চৌধুরী টিপু, আর একরামুজ্জামান, জামাল মিয়া, আব্দুল হান্নান, শেখ এম আহমেদ, আফজাল উদ্দিন, ফরহাদ হোসেন টিপু, আব্দুস সামাদ চৌধুরী, বেগম লাল বানু, গোলাম রসুল, মুহি আহাদ, ইব্রাহিম আলী খন্দকার প্রমুখ।

পরে নৈশভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।

ওএফ