দেশের গুরত্বপূর্ণ স্থানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য থাকলে তরুণ প্রজন্ম সেই উৎস থেকে তার লক্ষ্য এবং আদর্শ সম্পর্কে অনুপ্রাণিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বেলজিয়ামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ।

রোববার (১০ জানুয়ারি) রাতে ব্রাসেলেসের বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ‘স্বাধীন দেশ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রদূত মাহবুব সালেহ।

সদ্য শেষ হওয়া বছরের শেষের দিকে ঢাকার দক্ষিণে ধোলাইপাড় এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে বিতর্ক তোলে কয়েকটি ইসলামপন্থী দল। এ নিয়ে আলেমদের একটি অংশের ভাষ্য ছিল, ’ভাস্কর্য তৈরি ইসলামে নিষিদ্ধ’। হেফাজতে ইসলাম, খেলাফত মজলিশ এবং ইসলামী আন্দোলন নামের দলগুলো ভাস্কর্যবিরোধী অবস্থান ও আন্দোলনে যায়। দলগুলো এ নিয়ে সমাবেশ মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করেছে।

অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারাও এ নিয়ে কঠোর অবস্থানের জানান দেয়। এ অবস্থানের মধ্যে কুষ্টিয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের একটি নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

ওই ঘটনায় হেফাজতে ইসলামীর নেতা জুনায়েদ বাবুনগরী এবং মামুনুল হকসহ তিন জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ তদন্তের জন্য পুলিশের একটি তদন্ত সংস্থা পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এর আগে অবশ্য ৫ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পরে ইসলামপন্থী কয়েকটি দল এবং হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য উদ্যোগের কথা শোনা গেছে। এরপর থেকে ভাস্কর্য ইস্যুতে ইসলামপন্থী দলগুলোকে আর কথা বলতে শোনা যায়নি।

ব্রাসেলের বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাহেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের প্রফেসর ড. হাবিবুল্লা হক খন্দকার, দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া পত্রিকার কূটনৈতিক সম্পাদক ইন্দ্রানি বাগিচি এবং রবীন্দ্রনাথ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন পরামর্শক চঞ্চল খান।

রাষ্ট্রদূত মাহবুব সালেহ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বাংলাদেশের চিত্র তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা তার বাবার উদ্দেশ্য এবং আদর্শের পথ ধরেই আধুনিক ও উন্নত বাংলাদেশ বির্নিমানে কাজ করছেন। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর কূটনৈতিক পথ প্রদর্শনের মাধ্যমে বর্হিবিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছেন।

আমিরাতে জাহেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হাবিবুল্লা খন্দকার তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর বাস্তবসম্মত সামাজিক ন্যায়নীতি, সমতাসহ নতুন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের যে ভীত রচনা করে দিয়ে গেছেন তা তুলে ধরেন।  

দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া পত্রিকার কূটনৈতিক সম্পাদক ইন্দ্রানি বাগিচি বঙ্গবন্ধুর ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়’ এ কূটনৈতিক নীতির মধ্যে শান্তির বার্তা দিয়ে গেছেন তার প্রশংসা করেন।

রবীন্দ্রনাথ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন পরামর্শক চঞ্চল খান বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক নীতি তৈরি করে গেছেন।  

এনআই/এসএম