চুক্তিভিত্তিক বিয়ের (কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ) সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার তিনজনকে ৬ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে সাইপ্রাস পুলিশ। শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানী নিকোশিয়া থেকে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। গত শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) থেকেই তাদের ৬ দিনের রিমান্ড শুরু হয়। 

জানা যায়, ৩৪ বছর বয়সী এক যুবক নর্থ সাইপ্রাসে এসে অবৈধভাবে গ্রিক সাইপ্রাসে প্রবেশ করেন। গ্রিক সাইপ্রাসে শরণার্থী হওয়ার আবেদন করলে তা নাকচ করে দেয় সাইপ্রাস ইমিগ্রেশন। পরে তিনি অবৈধ হয়ে যান। সাইপ্রাসে বৈধ হতে কন্ট্রাক্ট ম্যারেজের জন্য দুজন দালালকে টাকা দেন, কিন্তু সাইপ্রাসে প্রায় দুই বছর ধরে চুক্তিভিত্তিক বিয়ে বন্ধ রয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। 

পুলিশ জানায়, গ্রেফতার তিনজনই নর্থ সাইপ্রাস থেকে অবৈধভাবে লোক আনার সঙ্গে জড়িত। তবে সাইপ্রাস সিআইডি বিভাগ দালালদের নাম এবং ছবি প্রকাশ না করায় তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি। 

সাইপ্রাসের আইন অনুযায়ী, যদি কারো বিরুদ্ধে কন্ট্রাক্ট ম্যারেজের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়। পাকিস্তান, নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশের অসংখ্য নাগরিক কন্ট্রাক্ট ম্যারেজের সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে দীর্ঘদিন ধরে জেলে আছেন। 

উল্লেখ্য, ইউরোপে কন্ট্রাক্ট ম্যারেজকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অতীতে এই অপরাধে জেল কেটে সাইপ্রাস থেকে দেশে ডিপোর্ট হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। আবার কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ করে সাইপ্রাস থেকে সেন্ট্রাল
ইউরোপে পাড়ি জমিয়েছে এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়। তবে সাইপ্রাস সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে 
সুযোগ করে দিয়েছিল বলে সেটা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে তারা কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাইপ্রাসে কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ করে সেন্ট্রাল ইউরোপে পাড়ি জমানোর জন্য যেসব বাংলাদেশি নর্থ
সাইপ্রাস হয়ে গ্রিক সাইপ্রাসে প্রবেশ করছেন তারা নিজেদের ভবিষ্যৎকে হুমকির মধ্যে ফেলছেন। সাইপ্রাসে লিগ্যাল হতে হলে বিয়ে করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই। কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ বন্ধ হওয়া মানে ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার এখানেই শেষ হয়ে যাওয়া। সাইপ্রাসে বর্তমানে ৭ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি এ অনিশ্চয়তায় দিন পার করছে। এছাড়াও পাকিস্তান, ভারত, নেপালসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের লক্ষাধিক নাগরিক রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার আশায় অনিশ্চিত দিন পার করছেন। 

এসকেডি