কানাডায় করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রধান চারটি প্রদেশ ব্রিটিশ কলম্বিয়া, অন্টারিও, কুইবেক ও আলবার্টায় প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছেন। আলবার্টার ক্যালগেরির করোনা পরীক্ষা কেন্দ্রে বিশাল লাইন দেখা গেছে। 

কানাডা জুড়েও প্রায় একই চিত্র। ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রদেশের প্রধানরা সর্তকতা জারিসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। হাসপাতালে আগের তুলনায় রোগীর চাপ বাড়ছে। আইসিইউ পরিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আগের অনেক সার্জারি সিডিউল পিছিয়ে নেওয়া হচ্ছে। জরুরি রোগী ছাড়া হাসপাতালগুলো পরামর্শ দিচ্ছে বাড়িতে সেবা নিতে। 

ইতোমধ্যে কানাডায় ছোট-বড় অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নতুন করে বন্ধ হয়ে গেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের অনেক কর্মী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় আবার অনেকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় কর্মস্থলে যাওয়া বাদ দিয়েছেন। ফলে মালিকেরা তাদের ব্যবসা বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। একইভাবে দেশের জরুরি পরিষেবাগুলোতেও কর্মী সংকট দেখা দেওয়ায় স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অন্যদিকে মৃদু বা মাঝারি করোনা আক্রান্ত ও প্রাপ্তবয়স্ক রোগীদের জন্য প্যাক্সলোভিড অনুমোদন দিয়েছে দেশটি। যারা অধিক গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে, হেলথ কানাডা কিশোর-কিশোরীদের বা করোনার কারণে ইতোমধ্যেই হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের ওপর ব্যবহারের জন্য এটি অনুমোদন করেনি।

হেলথ কানাডার প্রধান চিকিৎসা উপদেষ্টা ডা. সুপ্রিয়া শর্মা বলেছেন যে, অনুমোদনটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ আমরা নতুন ধরনের মুখোমুখি হয়েছি। ওষুধটি উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণদের হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা হ্রাস করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।

ডা. শর্মা আরো বলেন, ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলো প্রমাণ করে যে, করোনার লক্ষণ শুরু হওয়ার তিন দিনের মধ্যে প্যাক্সলোভিড ব্যবহার শুরু করলে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর ঝুঁকি ৮৯ শতাংশ কমিয়ে দেয়। পাঁচ দিনের মধ্যে শুরু হলে ৮৫ শতাংশ মৃত্যুর ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

কানাডার চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. থেরেসা ট্যাম বলেছেন, প্যাক্সলোভিডের প্রভাব এখনই দেখা যাবে না। এর ওষুধ পাওয়ার জন্য অগ্রাধিকার দেওয়া হবে- যারা মাঝারি থেকে গুরুতরভাবে ইমিউনো কমপ্রোমাইজড ও টিকা নিয়েও করোনার বিরুদ্ধে যথেষ্ট সুরক্ষা মাউন্ট করেন না; ৮০ বছরের বেশি বয়সী যাদের ভ্যাকসিন আপ টু ডেট নয় এবং ৬০ বছর বা তার বেশি বয়স্ক যারা গ্রামীণ বা সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়ে বসবাস করছেন, যার মধ্যে ফার্স্ট নেশন, ইনুইট ও মেটিস ব্যক্তিরা যাদের টিকা আপ টু ডেট নয়।

কানাডার স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও জরুরি পরিষেবার অনেক কর্মী অসুস্থ থাকায় হাসপাতালসহ জরুরি বিভাগকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

ওএফ