ভাটি বাংলার কৃতি সন্তান সুনামগঞ্জে জন্ম গ্রহণ করে দ্যুতি ছড়িয়েছিলেন সারা বাংলায়। এক সময়ে মতিহার ক্যাম্পাসে যিনি ছিলেন স্বৈরাচার আর মৌলবাদীদের আতঙ্ক, ছাত্রজীবন শেষে কলম যুদ্ধকেই বেঁচে নিলেন পেশা হিসেবে। আমৃত্যু প্রগতিশীলতার ধারক বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক, জনপ্রিয় লেখক ও কলামিস্ট পীর হাবিবুর রহমানের অকাল মৃত্যুতে কানাডা প্রবাসী সুধীজন শোক, শ্রদ্ধা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

এক শোক বার্তায় নতুনদেশ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর বলেন, কোভিড-১৯ আমাদের অনেক গুণীজনকে কেড়ে নিচ্ছে। একের পর এক সাংবাদিক ও গুণীজনদের মৃত্যুর সংবাদ আমাদের শুনতে হচ্ছে। পীর হাবিবুর রহমানের মৃত্যুতে তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

কানাডার আলবার্টার প্রথম বাংলা অনলাইন পোর্টাল ‘প্রবাস বাংলা ভয়েস’ এর প্রধান সম্পাদক আহসান রাজীব বুলবুল বলেন, প্রায় প্রতিদিনই আমরা গুণীজনদের মৃত্যুর খবর শুনছি। আমরা আর নিতে পারছি না। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মরহুম পীর হাবিবুর রহমান ভাইকে জান্নাতবাসী করুন। তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

এবিএম কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ বাতেন বলেন, প্রগতিশীল পীর হাবিবুর রহমানের মৃত্যুতে তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। এমন একজন গুণীজনের চলে যাওয়া পূরণ হওয়ার নয়।

কলামিস্ট ও উন্নয়ন গবেষক মো. মাহমুদ হাসান বলেন, পীর হাবিবুর রহমান ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ আমৃত্যু আপসহীন একজন যোদ্ধা। ছাত্রজীবনে প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনে সামনের সারিতে থেকে স্বৈরাচার ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে ইস্পাত-দৃঢ় অবস্থান নিয়ে রাজপথে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সাংবাদিকতার জীবনে নব্য সুবিধাবাদের বিরুদ্ধে নির্ভীক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তাই ত্যাগী দেশপ্রেমিক মানুষের কাছে তিনি ছিলেন ভরসাস্থল, জঙ্গিবাদ, মৌলবাদের ছিলেন চক্ষুশূল। তার অকাল মৃত্যুতে জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তিনি মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

সিলেট অ্যাসোসিয়েশন অব ক্যালগেরির সভাপতি রুপক দত্ত বলেন, বৃহত্তর সিলেটের কৃতি সন্তান নির্ভীক সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চিন্তা চেতনায় বিশ্বাসী একজন সত্যাশ্রয়ী মুক্তবুদ্ধি চর্চার অগ্রপথিক। তার চলে যাওয়ায় জাতি সত্যিকার অর্থেই এক মহান বিবেককে হারিয়েছে। তিনি তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।

বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ও সাবেক ছাত্রনেতা কিরন বনিক শংকর বলেন, পীর হাবিবুর রহমানের চিরবিদায় জাতির ওপর বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতোই। নানা অনাচার, অবিচার, অপসংস্কৃতি ও অপরাজনীতির মাঝে সাহসের সঙ্গে সত্যকে তুলে ধরার মতো মানুষের আজ বড়ই অভাব। প্রগতিশীল অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তিত্বের অধিকারী এমন মানুষের চিরবিদায়ে দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি তিনি গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করেন।

বিশিষ্ট রম্য লেখক বায়েজিদ গালিব বলেন, বরেণ্য সাংবাদিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কলামিস্ট পীর হাবিবুর রহমানের অকাল মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সহানুভূতি ও সমবেদনা জানাচ্ছি। তার অকাল প্রয়াণে বাংলাদেশ সাংবাদিক মহলে অপূরণীয় ক্ষতি হলো। তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

বরেণ্য সাংবাদিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কলামিস্ট পীর হাবিবুর রহমান ১৯৬৩ সালের ১২ নভেম্বর সুনামগঞ্জ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ১৯৮৪ সাল থেকে সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার, যুগান্তর, মানবকণ্ঠ, আমাদের সময় পত্রিকায় কাজ করেছেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

এসএসএইচ