জার্মানির বার্লিনে বাংলাদেশ দূতাবাসে মহান ‘শহীদ দিবস’ ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ পালন করেছে। করোনা মহামারি পরিস্থিতি বিবেচনায় দূতাবাস প্রাঙ্গণে সীমিত উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি পালন করা হয়।

মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়।

জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচির সূচনা করা হয়। তারপর রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, এনডিসি, মহোদয়ের নেতৃত্বে দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারী ও উপস্থিত অতিথিরা শহীদ স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। বাণীপাঠের পরপরই উপস্থিত দূতাবাস সদস্যরা ও কমিউনিটির অংশগ্রহণে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব, ইতিহাস ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনকেই বাংলাদেশ রাষ্ট্র সৃষ্টির পথে আন্দোলনের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে মনে করা যায়। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বিস্তৃত ভাষা আন্দোলনের বিশাল প্রেক্ষাপটে ততোধিক বিশালত্ব নিয়ে বিরাজিত একটি নাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ভাষা আন্দোলনের প্রথম পর্যায়ে ১৯৪৭-৪৮ সালে বঙ্গবন্ধু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে অর্থাৎ ১৯৫২ সালে জেলে থেকেও তিনি ২১ ফেব্রুয়ারিতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ ও মিছিল করার জন্য ছাত্রসমাজকে উদ্বুদ্ধ করেন। তাই ভাষা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা সংগ্রাম, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একে অপরের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন সম্পর্কে জড়িত।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তারিখ বাংলাকে মাতৃভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য জীবন উৎসর্গকারী সব ভাষা শহীদকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে তিনি আরও বলেন, ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের ইউনেস্কো কর্তৃক ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণায় কয়েকজন প্রবাসী বাঙালির সঙ্গে সরকারপ্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানও স্মরণযোগ্য। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণার ফলে বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অমর একুশে চেতনা আজ এক অনুপ্রেরণা।

এরপর শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা ও দেশ ও জাতির কল্যাণে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। পরিশেষে অনুষ্ঠানে যোগদান করা সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে এবং করোনাকালে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ ও সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

এসএসএইচ