ইফতারের আগে দোয়া। ছবি : সংগৃহীত

সারা দিন রোজা রাখার পর যে পানাহারের মাধ্যমে রোজার সমাপ্তি করা হয় সেটাকে ইফতার বলে। ইফতারের মুহূর্ত রোজাদারের জন্য পরম আনন্দের। ইফতারের বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। আল্লাহর নবী (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম ইফতার করতেন

আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী কারিম (সা.) বলেন, ‘রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ। একটি আনন্দ হচ্ছে যখন সে ইফতার করে। আরেকটি হচ্ছে যখন সে প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৭৬৬)

ইফতারের সময় যে দোয়া পড়বেন

ইফতারের সময় যে দোয়া পড়তে হয়— সে সম্পর্কে হাদিসে বর্ণনা এসেছে। ইফতারের পরের দোয়ার কথাও উল্লেখ হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল (সা.) যখন ইফতার করতেন, তখন বলতেন-

ইফতারের দোয়া আরবি :

ذَهَبَ الظَّمَاءُ وَابْتَلَّتِ الْعُرُوْقُ وَ ثَبَتَ الْأَجْرُ اِنْ شَاءَ اللهُ

ইফতারের দোয়া বাংলা উচ্চারণ : জাহাবাজ জামাউ; ওয়াবতাল্লাতিল উ’রুকু; ওয়া সাবাতাল আজরু ইনশাআল্লাহ।

অর্থ : (ইফতারের মাধ্যমে) পিপাসা দূর হলো, শিরা-উপসিরা সিক্ত হলো এবং যদি আল্লাহ চান সাওয়াবও স্থির হলো। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৫৭)

ইফতারের করার সময় যে দোয়া পড়বেন

আরবি :

بسم الله اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ

ইফতারের দোয়া বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিজের মাধ্যমে ইফতার করেছি। (মুআজ ইবনে জাহরা থেকে বর্ণিত, আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৫৮)

ইফতারের ব্যাপারে মহানবী (সা.)-এর নির্দেশনা হলো- ইফতারে বিলম্ব করা যাবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মানুষ যত দিন পর্যন্ত সময় হওয়ামাত্র ইফতার করবে, তত দিন কল্যাণের সঙ্গে থাকবে।’ (বুখারি, হাদিস : ২৮৫২)

ইফতারের পরের দোয়া

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইফতার করতেন, তখন বলতেন-

ذَهَبَ الظَّمَاءُ وَابْتَلَّتِ الْعُرُوْقُ وَ ثَبَتَ الْأَجْرُ اِنْ شَاءَ اللهُ

বাংলা উচ্চারণ : জাহাবাজ জামাউ; ওয়াবতাল্লাতিল উ’রুকু; ওয়া সাবাতাল আজরু ইনশাআল্লাহ।

অর্থ : ‘(ইফতারের মাধ্যমে) পিপাসা দূর হলো, শিরা-উপসিরা সিক্ত হলো এবং যদি আল্লাহ চান সাওয়াবও স্থির হলো।’ (আবু দাউদ, হাদিস, ২৩৫৭)

ইফতারের সময় করণীয়

>> ইফতারের সময় হয়ে গেলে দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করে ফেলা উচিত। কারণ, আল্লাহর রাসূল সা. ইফতারের সময় হওয়ার পর দেরি করতে নিষেধ করেছেন।
>> ইফতারের সময় অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত না থাকা। বরকতময় খাবারে মনোযোগী হওয়া উচিত। কারণ, রোজাদারের জন্য সব থেকে আনন্দের মুর্হুত ইফতারের সময়।

>> ইফতারের সময় বেশি বেশি দোয়া করা ও ইস্তেগফার পড়া উচিত। কারণ, এ সময় দোয়া কবুলের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে।
>> খেজুর দিয়ে ইফতার করার চেষ্টা করা।

>>  ইফতারের সময় ভারী খাবার না খাওয়া। মাগরিবের নামাজ আদায় করে তারপরে তৃপ্তিসহ খাবার খাওয়া। তাতে শরীর সুস্থ ও সবল থাকে।
>> দ্রুত ইফতার শেষ করে নামাজে যাওয়া উচিত।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সঠিকভাবে ইফতার করার ও রোজা রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।