প্রতীকী ছবি

আমি রমজানের রোজা রাখি। পাশাপাশি বিভিন্ন সময় নফল রোজাও রেখে থাকি। একবার রোজা থাকা অবস্থায় আমার এক দূরের আত্মীয়কে রক্ত দিতে হয়। তখন একজন হুজুর বললেন, রক্ত দিলে রোজার অসুবিধা হয় না। এখন আমার প্রশ্ন হলো- রোজা রাখা অবস্থায় রক্ত দেওয়া যবে কি?

এই প্রশ্নের উত্তর হলো- রোজা রাখা অবস্থায় কোনো রোগীকে রক্ত দিলে রোজা ভাঙবে না। রোজা ভঙ্গের কারণ হচ্ছে স্বাভাবিক প্রবেশ পথ দিয়ে শরীরে কোনও কিছু প্রবেশ করানো। শরীর থেকে কিছু বের হলে রোজা ভাঙে না। তাই রক্ত দিলে রোজা ভঙ্গ হবে না।

আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সাহাবি ইকরিমা (রা.) বলেন, নবী কারিম (সা.) হজের জন্য ইহরাম বাঁধা অবস্থায় শরীর থেকে শিঙ্গার মাধ্যমে রক্ত বের করেছেন এবং রোজা অবস্থায়ও শরীর থেকে শিঙ্গার মাধ্যমে রক্ত বের করেছেন। (বুখারি, হাদিস : ১৯৩৮; মুসলিম, হাদিস : ১১০৬; আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৭২)

তাই রোজা রেখে নিজের টেস্ট বা পরীক্ষার জন্য কিংবা কোনো রোগীকে দেওয়ার জন্য রক্ত দিলে, রোজার ক্ষতি হবে না। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে— কেউ যদি শারীরিকভাবে এমন দুর্বল হয় যে, রক্ত দিলে সে রোজা রাখার শক্তি হারিয়ে ফেলবে; তাহলে তার জন্য রক্ত দেওয়া মাকরুহ। (আহসানুল ফাতাওয়া : ০৪/৪৩৫)

অন্য হাদিসে সাবিত আল-বুনানি (রহ.) বলেন- আনাস ইবনে মালিক (রা.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে যে, রোজাদারের জন্য শরীর থেকে শিঙ্গা লাগিয়ে রক্ত বের করাকে কি আপনি অপছন্দ করেন? জবাবে তিনি বলেন- না, আমি অপছন্দ করি না। তবে দুর্বল হয়ে পড়ার ভয় থাকলে ভিন্ন কথা। (বুখারি, হাদিস : ০১/২৬০)

তাছাড়া রক্তদান রোগীর সেবার রোগীর সেবার অন্তর্ভুক্ত। কারণ পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি কোনো মানুষের জীবন রক্ষা করল, সে যেন পুরো মানবজাতিকে রক্ষা করল। (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৩২)

অতএব, রমজান মাসে মানবসেবার নিয়তে রক্ত দিতে প্রস্তুত থাক উচিত। এতে রোজা রাখার সওয়াব লাভের পাশাপাশি মানবসেবার সওয়াবও লাভ হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দান করুন।