দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে-পরে যত সুন্নত নামাজ আছে এরমধ্যে ফজরের সুন্নত সব থেকে ফজিলত ও গুরুত্বপূর্ণ। এ সম্পর্কে উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘ফজরের দুই রাকাত সুন্নত দুনিয়া ও দুনিয়ার মাঝে যা কিছু রয়েছে, তা থেকে উত্তম।’ (মুসলিম, হাদিস : ৭২৫)

উম্মুল মুমিনিন হাফসা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, মুয়াজ্জিন ফজরের আজান শেষ করলে ও ফজর উদিত হলে, রাসুল (সা.) ফজরের নামাজের আগে দুই রাকাত সংক্ষিপ্ত সুন্নত পড়তেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৬০১)

আরেক হাদিসে উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসুল (সা.) ফজরের দুই রাকাত সুন্নতের মতো অন্য কোনো নফলের প্রতি অতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন না।’ (বুখারি, হাদিস : ১১৬৩)

ফজরের সুন্নতের আরো গুরুত্ব সম্পর্কে আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের যদি ঘোড়া রেখে চলেও যায়, তবু ফজরের দুই রাকাত সুন্নত ত্যাগ করো না।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১২৫৮)

কোনও ব্যক্তি তাড়াহুড়া অথবা ঘুম থেকে কিছুটা দেরিতে উঠার কারণে যদি ফজরের ফরজ আদায়ের আগে দু’রাকাত সুন্নত পড়তে না পারে তাহলে সে এই দুই রাকাত নামাজ সূর্যোদয়ের পরে পড়ে নেবে।

তবে ফরজের পর সূর্যোদয়ের আগেই এই সুন্নত পড়বে না। কারণ এই সয়মটা হাদিসে বর্ণিত নামাজের মাকরূহ সময়ের অন্তভুর্ক্ত। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, ‘রাসুল (সা.) দুই সময় নামাজ পড়তে নিষেধ করেছেন। ফজরের পর সূর্য ওঠা পর্যন্ত এবং আসরের পর সূর্য ডোবা পর্যন্ত। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৮৮; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৮২৫)

ফজরের সুন্নত সময়মতো পড়তে না পারলে করণীয় বিষয়ে এক হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

مَنْ لمْ يُصَلِّ ركعتَي الفجْرِ ، فلْيُصلِّها بعدَ ما تَطلُعُ الشمْسُ

যে ব্যক্তি ফজরের দুই রাকাত সুন্নাত (ফরযের পূর্বে) আদায় করতে পারেনি সে সূর্য উঠার পর তা আদায় করবে। -(তিরমিজি, ৪২৩)তাই ফজরের সুন্নত ছুটে গেলে সূর্যোদয়ের আগে পড়বে না; বরং সূর্যোদয়ের পর থেকে সূর্য হেলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আদায় করে নেবে।

এনটি