সালাম দেওয়া সুন্নত। আর উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। মুসলমানরা একে অপরের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় সালাম দিয়ে থাকেন। কারণ সালাম ইসলামের অভিবাদন, শান্তির প্রতীক। সালামের মাধ্যমে নিরাপত্তা ও শান্তির বার্তা ছড়ানো হয়। সালাম দেওয়া-নেওয়া জান্নাতি মানুষের অভ্যাস। সালামের প্রচলন ইসলামের শ্রেষ্ঠ কাজ বলেছেন প্রিয় নবী (সা.)।  কখনও যদি সাক্ষাতের সময় দুইজন ব্যক্তি একে অপরকে একসঙ্গে সালাম দিয়ে ফেলেন তাহলে কে উত্তর দেবেন?

এ বিষয়ে ইসলামী আইন ও ফিকাহ শাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা বলেন-

দুই ব্যক্তি একই সঙ্গে একে অপরকে সালাম দিলে প্রত্যেকের ওপর অপরের সালামের উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। 

 

আর যদি আগে-পরে হয়ে যায় তা হলে পরে যে সালাম দেওয়া হয়েছে তা আগের সালামের জবাব হিসেবে গণ্য হবে। সুতরাং দ্বিতীয় ক্ষেত্রে পরে সালাম দিলে কারও জন্যই পুনরায় জবাব দেওয়া আবশ্যক হবে না। -(ফাতাওয়া তাতারখানিয়া : ১৮/৭৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ৫/৩৩৫; রদ্দুল মুহতার : ৬/৪১৬; মিরকাতুল মাফাতিহ : ৮/৪৬৭)

সালামের মাধ্যমে ভালোবাসা বৃ্দ্ধি 

সালামের মাধ্যমে পরস্পরের মাঝে ভালোবাসা বৃ্দ্ধি পায়। এ বিষয়ে হাদিস শরিফে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা যতক্ষণ ঈমান আনবে না, ততক্ষণ বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর যতক্ষণ তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা সৃষ্টি হবে না, ততক্ষণ তোমরা মুমিনও হতে পারবে না। আমি কি তোমাদেরকে একটি কাজের কথা বলে দেবো, যা করলে তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা সৃষ্টি হবে? তোমাদের মধ্যে সালামের ব্যাপক প্রচলন ঘটাও।’ -(সহিহ মুসলিম-৫৪)

জান্নাতেও সালামের প্রচলন থাকবে। এক জান্নাতি অপর জান্নাতিকে সালাম দেবে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘সেখানে তাদের অভিবাদন হবে সালাম।’ (সুরা ইউনুস, আয়াত : ১০)

মহান আল্লাহ তাআলাও জান্নাতিদের সালাম দেবেন। এটা তাদের জন্য চরম সৌভাগ্যের বিষয় হবে। আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘সালাম, পরম দয়ালু প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সম্ভাষণ।’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত : ৫৮)

আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘হে লোক সকল! তোমরা সালাম প্রচার করো, (ক্ষুধার্তকে) খাবার দান করো, আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখ এবং লোকে যখন (রাতে) ঘুমিয়ে থাকে, তখন তোমরা নামাজ পড়ো। তাহলে তোমরা নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ -(তিরমিজি, হাদিস : ২৪৮৫; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩৩৪-৩২৫১; দারেমি, হাদিস : ১৪৬০)

এনটি