প্রতীকী ছবি

বিতর নামাজ আদায় সংক্রান্ত সময়ের ব্যাপারে ফিকাহবিদরা একমত। তাদের সবার বক্তব্য হলো, বিতর নামাজ আদায়ের সময় শুরু হয় এশার নামাজ আদায়ের পরপর। আর ওয়াক্ত শেষ হয় সুবহে সাদিকের উদয়ের মাধ্যমে। অর্থাৎ ফজরের নামাজের ওয়াক্ত শুরু হলে বিতরের ওয়াক্ত আর থাকে না। (ড. ওয়াহবা আজ-জুহাইলি, আল-ফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহু, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ৬৬৯)

অতএব, কারো যদি শেষ রাতে তাহাজ্জুদের জন্য জাগ্রত হওয়ার নিশ্চয়তা থাকে, তাহলে তিনি তাহাজ্জুদের পরে বিতর পড়ে নেবেন। আর যদি বিতর রাতের শুরুর ভাগে এশার পর পড়া হয়, তখন সম্ভব হলে দুই-চার রাকাত নফল নামাজ পড়ার পর বিতর আদায় করবে। মাগরিবের মতো করে আগে কোনো নফল ছাড়া- শুধু তিন রাকাত বিতর পড়া পছন্দনীয় নয়।

হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমরা শুধু তিন রাকাত বিতর পড়ো না, এতে মাগরিবের সাদৃশ্যপূর্ণ করে ফেলবে; বরং পাঁচ, সাত, নয়, ১১ বা এরও বেশি রাকাতে বিতর পড়ো। (মুস্তাদরাকে হাকেম ১/৩০৪, হাদিস ১১৭৮; সুনানে কুবরা বাইহাকি : ৩/৩১, ৩২)

আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, 

রাসুল (সা.) রাতে নামাজ আদায় করতেন, তখন আমি তার বিছানায় আড়াআড়িভাবে ঘুমিয়ে থাকতাম। এরপর তিনি যখন বিতর পড়ার ইচ্ছা করতেন, তখন আমাকে জাগিয়ে দিতেন এবং আমিও বিতর আদায় করে নিতাম।

(বুখারি, হাদিস : ৯৯৭)

সায়িদ ইবনু ইয়াসার (রা.) বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) এর সঙ্গে মক্কার পথে সফর করছিলাম। সায়িদ (রহ.) বলেন, আমি যখন ফজর হওয়ার আশঙ্কা করলাম, তখন সাওয়ারি থেকে নেমে পড়লাম এবং বিতরের নামাজ আদায় করলাম। এরপর তার সঙ্গে মিলিত হলাম। তখন আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কোথায় ছিলে? আমি বললাম, ভোর হওয়ার আশঙ্কায় আমি নেমে বিতর আদায় করেছি। তখন তিনি বললেন, রাসুল (সা.)-এর মধ্যে কি তোমার জন্য ‍উত্তম আর্দশ নেই? আমি বললাম, হ্যাঁ, আল্লাহর কসম! তিনি বললেন, রাসুল (সা.) উঠের পিঠে (আরোহী অবস্থায়) বিতরের সালাত আদায় করতেন। (বুখারি, হাদিস : ৯৯৯)

হাদিসগুলো থেকে বিতর নামাজের গুরুত্ব বোঝা যায়। তাই শেষ রাতে জেগে বিতর পড়তে না পারার আশঙ্কা থাকলে, শুরুর রাতে পড়ে নেওয়া জরুরি। না হয়, শেষ রাতে তাহাজ্জুদ পড়ে এরপর বিতর আদায় করে নেওয়া উত্তম।