নৌযানে নামাজ পড়বেন যেভাবে; প্রতীকী ছবি

প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর মুসলিম নারী-পুরুষদের ওপর দিনে পাঁচবার নামাজ আদায় করা ফরজ। অন্য ধর্ম থেকে কেউ ইসলাম গ্রহণ করলেও তার ওপর নামাজ ফরজ হয়ে যায়। নামাজের বিধানে কোনও ধরনের শিথিলতা গ্রহণযোগ্য নয়। প্রচণ্ড অসুস্থতার সময়েও বসে, শুয়ে অথবা ইশারায় নামাজ পড়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ো, যদি না পারো তাহলে বসে নামাজ পড়ো, যদি তাও না পারো, তাহলে ইশারা করে নামাজ আদায় করো। -(বুখারি, হাদিস : ১০৫০)

নামাজ না পড়ার শাস্তির বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘(জাহান্নামিদের জিজ্ঞাসা করা হবে) তোমাদের কোন জিনিস সাকারে (জাহান্নাম) নিক্ষেপ করেছে? তারা বলবে, আমরা সালাত আদায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না।’ -(সুরা : মুদ্দাসসির, আয়াত : ৪২-৪৩)

নামাজ না পড়া অভ্যাসে পরিণত করা একজন মুসলমানের জন্য কলঙ্কজনক একটি কাজ। কারণ, এমন অভ্যাসের মাধ্যমে মানুষের ঈমান দুর্বল হয়ে যায়। হাদিসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজ না পড়াকে কুফরি কাজ ও কাফিরের স্বভাব বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। বর্ণিত হয়েছে, ‘যার ভেতর নামাজ নেই, তার ভেতর দ্বিনের কোনো হিস্যা নেই।’ -(মুসনাদে বাজ্জার, হাদিস : ৮৫৩৯)

প্রত্যেক মুসলমানের প্রতিদিন সময়মতো নামাজ আদায় করা উচিত। চাই সে নিজের বাড়িতে থাকুক অথবা অন্য কোনও জায়গায় সফর বা ভ্রমণে। কেউ যদি ভ্রমণ বা বিশেষ প্রয়োজনে নৌযানে থাকে এবং এ অবস্থায় নামাজের সময় হয়ে যায়, তাহলে তিনি কিভাবে নামাজ পড়বেন?

এ বিষয়ে ইসলামী আইন ও ফিকাহ শাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা বলেন, লঞ্চ অথবা যেকোনও ধরনের নৌযান যদি উপকূলে নোঙর করা থাকে, শান্ত থাকে, দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা সম্ভব হয়, তবে দাঁড়িয়েই নামাজ পড়তে হবে। 

আর যদি নৌযান নোঙর করা আছে এবং সাগর অশান্ত হওয়ায় দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা সম্ভব নয়, তবে বাইরে গিয়ে নামাজ পড়ার সুযোগ আছে, তাহলে লঞ্চে নামাজ বৈধ নয়। তবে চলন্ত নৌযানে দাঁড়াতে না পারলে সর্বসম্মতিক্রমে বসে নামাজ আদায় করা যাবে। 

আর দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার কারণে মাথা চক্কর দিলে সর্বসম্মতিক্রমে বসেই নামাজ পড়া যাবে।  

তবে নৌযানে কিবলার দিকে ফিরে নামাজ শুরু করার পর তা ঘুরে গেলে নামাজিকেও কিবলার দিকে ঘুরে যেতে হবে এবং কিবলার দিকে ফিরেই নামাজ সম্পন্ন করতে হবে। আর নামাজের মধ্যে লঞ্চ ঘুরে গেছে জানা সত্ত্বেও যদি কেউ কেবলামুখী না হয় তাহলে নামাজ হবে না।

-(কিতাবুল আছল ১/২৬৯; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৯১; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪৩২; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৪৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৬৩; রদ্দুল মুহতার ২/১০১)