প্রতীকী ছবি

মানুষের বিভিন্ন দিকে যাত্রা করতে হয়। অনেক সময় দূরের যাত্রায় যানবাহনে মধ্যে নামাজের সময় হয়ে যায়। তখন হয়তো রাস্তার পাশের মসজিদে নামাজ পড়া হয়। তবে কখনো নামাজ পড়ার ‍জায়গা পাওয়া না গেলে— তখন নামাজ পড়ার নিয়ম কী? এমনটা অনেকে জিজ্ঞেস করে থাকেন।

স্বাভাবিকভাবে যানবাহনে যাত্রার সময় নামাজ আদায়ের দুইটি সুরত হতে পারে—

এক.
এমন সময় যানবাহনে ওঠা উচিত নয়, যাতে করে নামাজ আদায়ে সমস্যা হতে পারে। তবে একান্ত প্রয়োজনে রওয়ানা করতে হলেও যেন নামাজ কাজা না হয়; সে ব্যাপারে যত্নবান থাকা চাই।

জেনে রাখা উচিত, গাড়ি থেকে বার বার ওঠানামা কষ্টকর মনে হলেও নামাজ কাজা করা যাবে না। বরং নামাজের সময়গুলোতে বাস থামিয়ে নিচে কোনো স্থানে কিয়াম ও রুকু-সিজদার মাধ্যমে নামাজ আদায় করে নেবে।

এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- অনেক সময় পুরুষরা বাস থামিয়ে নামাজ পড়লেও নারীরা পর্দার কারণে কিংবা লজ্জার দরুন নামাজ পড়েন না। অথচ এটা গোনাহের কাজ। তারা যথা নিয়মে ওজু করে মসজিদের একপাশে বা অন্য কোনো স্থানে বোরকা পরিহিত অবস্থায় নামাজ আদায় করে নিতে পারেন। পাশাপাশি তাদের জন্য নিরাপদ ও আরামদায়ক নামাজের স্থান রাখা অন্যদের কর্তব্য।

দুই.
গাড়ি, যানবাহান বা বাস যদি থামানো না যায় কিংবা যানবাহন থেকে নামলে সঙ্গী ও বাস চলে যাওয়ার এবং পরবর্তীতে সে বাসে আর উঠতে না পারার আশঙ্কা থাকে— তাহলে বাসে নামাজ পড়া জায়েজ। এ ক্ষেত্রে সুযোগ থাকলে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ে নেবে। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কেউ বসে নামাজ পড়লে, তার নামাজ হবে না।

দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার সময় পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে, কিছুতে হেলান দিয়ে দাঁড়াবে। কারণ হাত বাঁধা সুন্নত আর দাঁড়ানো ফরজ। তাই ফরজ রক্ষার্থে সুন্নতের ক্ষেত্রে শিথিলতা মার্জনীয়। পক্ষান্তরে দাঁড়ানোর কোনো রকম সুযোগ না থাকলে, বসে ইশারা করে নামাজ পড়ে নেবে। পরে এই নামাজ আর পুনরায় পড়তে হবে না।

যানবাহনে নামাজ পড়ার সময় যথাসাধ্য চেষ্টা করবে— কেবলামুখি হতে। যদি গাড়ি কেবলামুখ থেকে অন্যদিকে ঘুরে যায়, তবে নামাজে থাকা অবস্থায় কিবলার দিকে ঘুরে যাবে। যদি সম্ভব না হয়, তাহলে যেদিকে মুখ থাকে, সেদিকে মুখ রেখেই নামাজ শেষ করবে। কিন্তু ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কেবলামুখি হয়ে নামাজ আদায় না করলে, এই নামাজ পরে আবার পড়ে নেওয়া আবশ্যক। আর কেবলামুখি হয়ে নামাজ আদায় করলে, পরে তা আবার আদায় করতে হবে না।

প্রসঙ্গত, যদি অজু না থাকে এবং অজুর পানিও না থাকে— তাহলে তায়াম্মুম করে নামাজ আদায় করে নেবে। তবে এই নামাজ পুনরায় পড়তে হবে না। আর যদি তায়াম্মুম করারও সুযোগ না থাকে, তবুও ইশারায় নামাজ পড়ে নেবে। অবশ্য পরে এই নামাজের কাজা করতে হবে।

তথ্যসূত্র : মাআরিফুস সুনান ৩/৩৯৪-৯৬; আহসানুল ফাতাওয়া ৪/৮৮ ও ১/২৯১; রদ্দুল মুহতার: ২/১০২,৪৯১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া: ১/২৮, ১৪৪