প্রতীকী ছবি

নামাজ আদায়ের জন্য অজু করতে হয়। অজু না থাকলে নামাজ হয় না। তাই নামাজের জন্য অজু আবশ্যক। অজুর মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করা হয়। আল্লাহর সন্তুষ্টিও লাভ হয়। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে,  ‘হে মুমিনগণ! যখন তোমরা নামাজে দাঁড়াতে চাও; তখন তোমাদের মুখমণ্ডল ধোও, আর উভয়হাত কনুই পর্যন্ত ধোও, মাথা মাসেহ কর এবং উভয় পা টাখনু পর্যন্ত ধোও।’ -(সুরা মায়েদা : আয়াত ৬)

এক হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) হাদিসে বলেন, ‘তোমাদের কারো যদি অজু ভেঙে যায়, তাহলে পুনরায় অজু করার আগ পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা তার নামাজ কবুল করেন না।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৯৫৪; মুসলিম, হাদিস : ২২৫)

কোরআনের আয়াত ও হাদিসের মাধ্যমে বুঝা যায় নামাজ পড়ার পূর্বশর্ত হলো অজু। অজু নামাজের চাবি। এ বিষয়ে হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জান্নাতের চাবি হচ্ছে নামাজ, আর নামাজের চাবি হচ্ছে অজু।’ -(তিরমিজি, হাদিস : ৪)

যে সব কারণে মানুষের অজু তা কোনওটি ঘটে গেলে নতুন করে অজু করতে হয়। অন্যথায় নামাজ ও কোরআন স্পর্শ করা যাবে না। এখন প্রশ্ন হলো, কারো যদি বাসের সিটে হালকা ঝিমুনি বা ঘুম চলে আসে তাহলে ঘুম ভাঙবে কিনা। এমন একটি পরিস্থিতি নিয়ে একজন জানতে চেয়েছেন-

‘আমার বন্ধু খালেদ অজু করে বাসে আরোহন করে সায়েদাবাদের উদ্দেশ্যে। কিছুক্ষণ পর ঝিমুনি আসলে সে সিটে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। প্রায় দশ মিনিট ঘুমানোর পর জাগ্রত হয় এবং একটু পরই গন্তব্যস্থলে নেমে মাগরিবের নামাজ পূর্বের অজুতেই আদায় করে। তার নামাজ কি সহীহ হয়েছে?

 

 এ প্রশ্নের প্রেক্ষিতে ইসলামী আইন ও ফেকাহ শাস্ত্রবিদেরা বলেন, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সিটে বসে ঘুমানো অবস্থায় লোকটির কোমরের নিচের অংশ সিটের সাথে ভালোভাবে এঁটে লেগে থাকলে তার অজু নষ্ট হয়নি বলে ধরা হবে। এক্ষেত্রে ওই অজু দিয়ে মাগরিবের নামাজ আদায় করা সহীহ হয়েছে। তবে এধরনের ক্ষেত্রে সতর্কতামূলক পুনরায় অজু করে নেওয়া ভালো।

আর যদি ঘুমন্ত অবস্থায় সিট থেকে কোমরের নীচের অংশ পৃথক হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে অজু নষ্ট হয়ে গেছে বলে ধরা হবে। এক্ষেত্রে ওই নামাজ পুনরায় পড়ে নিতে হবে। -(বাদায়েউস সানায়ে ১/১৩৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৪১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৯, আল কাউসার, সংখ্যা, ২০০৯/৩/ প্রশ্ন, ১৫৫৫ )

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি আবদুল মালেক, শিক্ষা সচিব, উচ্চতর গবেষণা প্রতিষ্ঠান মারকাযুদ্দাওয়া আল ইসলামিয়া ঢাকা

এনটি