প্রতীকী ছবি

তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের গুরুত্ব অপরিসীম। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বিশেষভাবে তাহাজ্জুদ পড়তে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। মূলত আরবি ‘তাহাজ্জুদ’ শব্দের আভিধানিক অর্থ রাত জাগরণ বা নিদ্রা ত্যাগ করে রাতে নামাজ পড়া।

তাহাজ্জুদের নামাজ মৌলিকভাবে ‘কিয়ামুল লাইল’র অন্তর্ভুক্ত। এটা মুসল্লি বা তাহাজ্জুদ আদায়কারীর অবস্থাভেদে বিবেচ্য। কারণ, রাতে ঘুমের পর কেবল নামাজ আদায়ের জন্য জাগ্রত হওয়াই হলো- তাহাজ্জুদ। চাই তা অল্প সময়ের জন্য হোক বা বেশি সময়ের। আর কিয়ামুল লাইল হলো- নামাজ, জিকির, দোয়া ও কোরআন তেলাওয়াত ইত্যাদির সমষ্টি। এগুলো রাতের যেকোনো অংশে হতে পারে।

তাহাজ্জুদ আদায়ের নিয়ম
তাহাজ্জুদের নামাজ আদায়ের পদ্ধতি হাদিসের বর্ণনা অনুসারে এভাবে হতে পারে— 

যে তাহাজ্জুদ আদায় করতে চায়, সে এশার নামাজ শেষে ঘুমিয়ে পড়বে। চাই তা অল্প সময়ের জন্য হোক। এরপর রাতের মধ্য ভাগে জেগে অল্প সময়ে দুই রাকাত নামাজ পড়বে। এরপর যত রাকাত ইচ্ছে নামাজ আদায় করবে, তবে নামাজ হতে হবে দুই রাকাত করে। দুই রাকাত শেষে সালাম ফিরাবে, আবার দুই রাকাত পড়বে...। এভাবে যত রাকাত সম্ভব, তাহাজ্জুদ আদায়ের পর বিতর নামাজ আদায় করবে। (শায়খ আবদুল আজিজ ইবনে আবদুল্লাহ বিন বাজ; কাইফিয়্যাতু সালাতুত তাহাজ্জুদ ওয়া কিয়ামুল লাইল, ফাতাওয়া নুরুন আলাদ দারব, খণ্ড : ১০, পৃষ্ঠা : ২১-২৪)

আসওয়াদ ইবনে ইয়াজিদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রা.)-এর কাছে রাসুল (সা.)-এর তাহাজ্জুদ নামাজ (রাতের) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, তিনি রাতের প্রথমাংশে ঘুমাতেন। তারপর নামাজে দাঁড়াতেন এবং সাহরির পূর্বক্ষণে বিতর আদায় করতেন। এরপর প্রয়োজন মনে করলে বিছানায় আসতেন। তারপর আজানের শব্দ শুনে জেগে উঠতেন এবং অপবিত্র হলে সর্বাগ্রে পানি বইয়ে গোসল করে নিতেন নতুবা অজু করতেন। তারপর নামাজ আদায় করতেন। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ১৬৮০; মুসনাদ আহমদ, হাদিস : ২৫৪৭৪)

আবু সালামাহ্‌ ইব্‌নু আবদির রাহমান (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি ‘আয়িশা (রা.)-কে জিজ্ঞেস করেন, রমজন মাসে আল্লাহ্‌র রাসুল (সা.)-এর নামাজ কেমন ছিল? তিনি বললেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) রমজান মাসে এবং অন্যান্য সময় (রাতে) এগার রাকাতের অধিক নামাজ আদায় করতেন না। তিনি চার রাকাত নামাজ আদায় করতেন। তুমি সেই নামাজের সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে আমাকে প্রশ্ন করো না। তারপর চার রাকাত নামাজ আদায় করতেন, এর সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে আমাকে প্রশ্ন করো না। অতঃপর তিনি তিন রাকাত (বিতর) নামাজ আদায় করতেন।’ (বুখারি, হাদিস : ১১৪৭)