প্রতীকী ছবি

ফরজ নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য ১৩টি কাজ করা আবশ্যক। এর সাতটি নামাজের বাহিরে আর ছয়টি নামাজের ভেতরে। নামাজের ভেতরে যেসব কাজ ফরজ তার মধ্যে একটি হলো সিজদা করা। সিজদা ছাড়া নামাজ আদায় হবে না। -(সুরা হজ, আয়াত ৭৭; বুখারি ১/১০১, হাদিস : ৭৩৩, মুসলিম ১/১৭৬, হাদিস : ৪১১)

নামাজে সিজদার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর নৈকট্যে চলে যায়। সিজদা মানে প্রভুর দরবারে মাথা লুটিয়ে দেওয়া। সিজদা শব্দটি মূলত আরবি। শাব্দিক অর্থ- নম্রতা, বিনয়, মাথানত করা, আত্মসমর্পণ করা, ঝুঁকে পড়া, চেহারা মাটিতে রাখা ইত্যাদি।

পারিভাষায় আল্লাহ তাআলার ইবাদতের উদ্দেশ্যে বিনম্রচিত্তে মানুষের সাতটি অঙ্গ দ্বারা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে— যে ইবাদত করা হয়, তাকে সিজদা বলে। 

সাতটি অঙ্গ বলতে আমরা সরাসরি সহিহ বোখারি ও মুসলিম শরিফে বর্ণিদ হাদিসের মাধ্যমে জানতে পারি, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমাকে শরীরের সাতটি হাড়; যথা- নাকসহ কপাল, দুই হাত, দুই হাঁটু, দুই পায়ের পাতার অগ্রভাগের সাহায্যে সিজদা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর কাপড়, দাড়ি ও চুল একত্রিত করে বেঁধে রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। (মিশকাত, হাদিস : ৮৮৭)

নামাজে সেজদারত অবস্থায় দুই পায়ের আঙুল মাটিতে বিছিয়ে রাখতে হয়। সেজদারত অবস্থায় কোনো এক মুহূর্তের জন্য হলেও এক পায়ের কিছু অংশ জমিনে থাকা জরুরি। আর যদি পূর্ণ সেজদায় উভয় পা জমিন থেকে পৃথক থাকে অর্থাৎ সেজদার পুরো সময়ের মধ্যে কিছুক্ষণের জন্যও পায়ের কিছু অংশ জমিনে না লাগে তাহলে সেজদা সহিহ না হওয়ার কারণে নামাজ হবে না। সেই নামাজ দ্বিতীয় বার পড়তে হবে। 

আর যদি সেজদারত অবস্থায় কিছু সময়ের জন্য জমিন থেকে উঠে যায় এবং ওঠার পরেই আবার জমিনের সঙ্গে মিলিয়ে দেয়, তাহলে তাতে নামাজ ভঙ্গ হবে না। তবে মাকরুহ হবে। কেননা পূর্ণ সময় উভয় পা জমিনে রাখা এবং কেবলামুখী করে রাখা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। (আদ-দুররুল মুখতার : ১৪৪৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া : ১/৫০৬; আহসানুল ফাতাওয়া : ৩/৯৬; ফাতাওয়ায়ে রাহমানিয়া : ১/২৯৭)

এনটি