প্রতীকী ছবি

ইসলাম মানুষের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ সাধনে বেশ গুরুত্বারোপ করেছে। তাই শরীরচর্চা এবং আনন্দ ও চিত্তবিনোদনের জন্য ইসলাম শর্তসাপেক্ষে খেলাধুলার অনুমতি দিয়েছে। কারণ খেলাধুলাও ইসলামের মহৎ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে সহায়ক হয়।

যেমন শরীরচর্চার মাধ্যমে ইসলামের জন্য জীবনবাজি রেখে জিহাদের প্রশিক্ষণের কাজ হয়। দেহে প্রফুল্লতার সঞ্চার হয় এবং প্রাণশক্তি বৃদ্ধি পায়। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষা, রণ-নৈপুণ্যের প্রয়োজনে তীর নিক্ষেপ, বর্শা চালনা, দৌড় প্রতিযোগিতা ইত্যাদিকে ইসলাম সমর্থন করে।

হাদিসে বর্ণিত রয়েছে- প্রিয় নবী সা: বলেন, ‘ঘোড়া অথবা তীর নিক্ষেপ কিংবা উটের প্রতিযোগিতা ছাড়া (ইসলামে) অন্য প্রতিযোগিতা নেই’ (তিরমিজি-৫৬৪)। তিনি আরো বলেন, ‘যে ব্যক্তি তীর চালনা শেখার পর তা ছেড়ে দেয় সে আমার দলভুক্ত নয়’ (মুসলিম-৭৬৬৮)।

তবে গেম, খেলাধূলা যদি কেবল সময়ের অপচয়ের মাধ্যম হয়, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি দীন থেকে গাফেল হয় এবং তাতে জুয়ার মিশ্রণ থাকে, তখন ওই খেলা হারামে পরিণত হয়।

একদিন দুজন আনসার সাহাবি তীর নিক্ষেপ প্রতিযোগিতা করছিলেন। হঠাৎ একজন বসে পড়লেন। তখন অপরজন বিস্মিত হয়ে বললেন, কী ব্যাপার। কষ্ট হয়ে গেল নাকি? জবাবে তিনি বললেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (স.)-কে বলতে শুনেছি যে, প্রত্যেক বস্তুত যা আল্লাহর স্মরণকে ভুলিয়ে দেয়, সেটাই অনর্থক..।’ (নাসায়ি, সহিহাহ: ৩১৫)

এতে বুঝা যায় যে, বৈধ খেলাও যদি আল্লাহর স্মরণকে ভুলিয়ে দেয়, তা জায়েজ হবে না। ইমাম বুখারি (রহ) অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন, ‘প্রত্যেক খেলা-ধুলা বাতিল, যদি তা আল্লাহর আনুগত্য থেকে উদাসীন করে দেয়’ (ফাতহুল বারি ‘অনুমতি গ্রহণ’ অধ্যায় ৭৯, অনুচ্ছেদ ৫২; ১১/৯৪ পৃ)

আল্লাহ তাআলা বলেন, এমন কিছু লোক আছে, যারা অজ্ঞতাবশত বাজে কথা খরিদ করে মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য এবং সত্য পথকে তারা বিদ্রূপ করে, তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর শাস্তি’। ‘যখন তাদের নিকট আমার আয়াতসমূহ পাঠ করা হয়, তখন সে দম্ভভরে মুখ ফিরিয়ে নেয়, যেন সে এটা শুনতেই পায়নি। যেন তার দুই কানে বধিরতা রয়েছে। অতএব তুমি তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দাও।’ (সুরা লোকমান ৬-৭)

আলেমরা বলেন,শরীয়ত বিরোধী কোন কিছু না থাকলে চিত্ত বিনোদনের উদ্দেশ্যে মাঝেমধ্যে শর্ত সাপেক্ষে মোবাইলে ‘গেইম খেলা’ খুব বেশি দোষণীয় নয়। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে গেমে যেন মিউজিক, বেপর্দা নারী/পুরুষ, হত্যাকাণ্ড, চুরি-ডাকাতি, চরিত্রহীনতার দিকে আহ্বান, অশ্লীলতা-নোংরামী ইত্যাদি না থাকা। একইভাবে বাজি ধরা বা জুয়ায় লিপ্ত হওয়া, খেলায় মত্ত হয়ে প্রচুর সময় নষ্ট করা, নামাজে গাফলতি এবং নিজ দায়িত্ব-কতর্ব্য পালনে অবহেলা প্রদর্শন ইত্যাদি না থাকা জরুরি।

এনটি