স্মরণকালের বিধ্বংসী ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত তুরস্ক-সিরিয়া। দেশটিতে চলছে শোকের মাতম। সোমবার ভোরের দিকে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। 

এখনও অসংখ্য মানুষ ধসে যাওয়া হাজার হাজার ভবনের নিচে চাপা পড়ায় মৃতের সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারে ধারণা এ সংখ্যা ৮ গুণ বৃদ্ধি পেতে পারে।

এদিকে তুরস্কের স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে প্রথমবার ভূমিকম্পের আঘাত হানার পর এখন পর্যন্ত আরও দুইবার ভূমিকম্পের কবলে পড়েছে ইউরেশিয়ার দেশটি।

বিধ্বংসী এই ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তুরস্ক ও সিরিয়ার বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনা। তুরস্কের গাজিয়ানতেপ শহরের একটি রোমান যুগের দুর্গ ভূমিকম্পে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি সিরিয়ার ঐতিহাসিক বিভিন্ন স্থাপনাগুলো ক্ষতির মুখে পড়েছে।

তুরস্কে প্রায় ছয় শ বছরেরও বেশি সময় শাসন করেছেন উসমানীয় সুলতানেররা এসময় গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্তম্ভ ও দৃষ্টিনন্দন মসজিদ। বছরজুড়ে এসব দেখতে তুরস্কে ভিড় জমান পর্যটকেরা। তুরস্কে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ক্ষেত্রে পর্যটন খাত গুরুত্বপূর্ণ উৎস। ২০১৬ সালে টার্কিশ পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউটের (টার্ক স্টেট) তথ্যানুযায়ী, বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) পর্যটন খাত থেকে রাজস্ব আয় ছিল ৯০৪ কোটি ডলার। 

এবারের  বিধ্বংসী ভূমিকম্পে একেবারে ধসে পড়েছে তুরস্কের মালতায়া প্রদেশে অবস্থিত ঐতিহাসিক ইয়েনি মসজিদ। জানা গেছে, এর আগে মসজিদটি ২০২০ সালের ২৪ জানুয়ারি ইলাজিগের সিভরিস জেলায় সংঘটিত ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

সোমবারের প্রথম ভূমিকম্পে ঐতিহাসিক মসজিদের বেশ ক্ষতি হয়। আর সোমবার দ্বিতীয় দফায় ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পে মসজিদটি সম্পর্ণরূপে ধসে যায়। মালতিয়া প্রদেশের প্রতীক হয়ে ওঠা এই মসজিদটির বয়স ছিল ১২৩ বছর। মসজিদটিকে সাধারণত ইয়েনি কামি বা নতুন মসজিদ বলা হয়। তবে নাগরিকদের মধ্যে ‘তেজে মসজিদ’ নামেও পরিচিত ছিল।

ইয়েনি মসজিদটি ১৮৯৪ সালের ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে যাওয়া হাজি ইউসুফ মসজিদের জায়গায় নির্মিত হয়েছিল। এই মসজিদটির পূর্ণনির্মাণ হয় ১৮৯৪ সালের ৩০ মার্চ। মসজিদটি নির্মার্ণে অর্থায়ন করেছিলেন উসমানী সুলতান দ্বিতীয় আব্দুল হামিদ। তিনি এই মসজিদ নির্মাণে ১০ হাজার স্বর্ণমুদ্রা পাঠিয়েছিলেন।

এনটি