নিজের ভুল স্বীকার করতে আমাদের ‘দ্বিধা’ হয়। কাছের মানুষের অন্যায়কে অন্যায় বলতে ‘দ্বিধা’ হয়। গরিব বয়স্ক লোককে সম্মান জানাতে ‘দ্বিধা’ হয়। বাবা-মাকে সালাম দিতে দ্বিধা হয়। বাসার কাজের লোককে নিজেদের মতো মানুষ ভাবতে 'দ্বিধা' হয়। এমন অনেক মন্দ ‘দ্বিধা’ আমরা পদে পদে লালন করি। 

এসব নিন্দনীয় ‘দ্বিধা’ দূর করবার জন্যে ওরা ক্যাম্পেইন করে না। ওরা ক্যাম্পেইন করে মানব-চরিত্রের অলংকার —‘সহজাত লাজুকতা’ ও হারামে লিপ্ত হওয়ার ‘দ্বিধা’ দূর করার জন্যে। 

যারা তরুণদের প্রশংসনীয় 'লাজ' দূর করতে চায়, নির্মূল করতে চায় দেশীয় সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধ, তাদের থেকেই বরং দ্বিধাহীন দূরে সরার গল্প আমাদের রচনা করতে হবে।

নির্দিষ্ট বয়সে পৌঁছার পর নারী-পুরুষ একে অন্যের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করে। এটা আল্লাহর সৃষ্টিবৈচিত্র্যের অংশ। এ আকর্ষণকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখিয়েছে ইসলাম। কিন্তু পশ্চিমা সভ্যতা তা করতে নারাজ। 

ডক্টর খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহ বলতেন, ‘নারী-পুরুষের জৈবিক ভালোবাসাকে প্রমোট করতে হয় না। এটা এমনিতেই (সৃষ্টিগতভাবে) প্রমোটেড। এটাকে বরং কন্ট্রোল করতে হয়।’ 

একটি গতিশীল গাড়িকে যদি পেছন থেকে শক্তিশালী কিছু ধাক্কা দেয়, তাহলে সেটা নিশ্চিত দুর্ঘটনার শিকার হবে। ঠিক একইভাবে যৌবনে উজ্জীবিত একজন মানুষের যৌন আগ্রহকে যদি নানা প্রচারণার মাধ্যমে আরো বেশি জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়, তবে তা যৌন নীপিড়নসহ নানা অপরাধ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ হবে। 

অবাধ যৌনতার মূল্য দিতে গিয়ে এ সমাজের বহু তরুণী ধর্ষণ এবং অনেকে প্রতারণার শিকার হয়েছেন, অনেকে আত্মহত্যার পথে পা বাড়িয়েছেন, অনেকের ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়েছে, অনেক নারীর বস্তাবন্দী লাশ ভেসে গেছে নদীর জলে, ফুলের মতো সাজানো অসংখ্য পরিবার লণ্ডভণ্ড হয়েছে। 

হে তরুণ, আবেগ অনেকটা সফট ড্রিংকসের ঝাঁজের মতো। বেশি সময় থাকে না। অন্তরের আবেগ বৈধ ভালোবাসার জন্য জমিয়ে রাখুন। আবেগ ও প্রেম যদি অবৈধ ভালোবাসায় খরচ করে ফেলেন, যখন বৈধ ভালোবাসা শুরু হবে, তখন আপনার ভালোবাসার পুঁজিতে টান পড়বে। 

সুতরাং হারাম রিলেশনকে ‘না’ বলুন, পবিত্রতার পথে অবিচল থাকুন।